চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় বেড়েছে। গত মাসে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ২১০ কোটি ১০ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়লেও জানুয়ারিতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার কমে গিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, গত ৩ জানুয়ারি দেশের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী (বিপিএম৬) দেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ১৭৪ কোটি বা ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। ৩১ জানুয়ারি এসে রিজার্ভের পরিমাণ ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। সে হিসাবে জানুয়ারিতে রিজার্ভ থেকে ১৮০ কোটি ডলারের বেশি ক্ষয় হয়েছে।
এদিকে গ্রস রিজার্ভ কমে যাওয়ায় দেশের নিট রিজার্ভের পরিমাণও প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার কমে গিয়েছে। দেশের নিট রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারেরও কম বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ প্রাপ্তির শর্ত হিসাবে গত ৩১ ডিসেম্বর নিট রিজার্ভ ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার থাকার কথা ছিল। এ শর্ত পূরণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি ডলার কিনে নিয়েছিল। কিন্তু তারপরও আইএমএফের শর্ত পূরণ করা সম্ভব হয়নি।
ডিসেম্বরে শেষ আইএমএফসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছ থেকে প্রাপ্ত ঋণ ও বাজার থেকে ডলার কিনে রিজার্ভ প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সময় আইএমএফ থেকে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ ৬৯ কোটি ডলার ও এডিবি থেকে ৪০ কোটি ডলার ঋণ পায় বাংলাদেশ। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ১০৪ কোটি ডলার কিনে নেয়া হয়েছিল। মূলত আইএমএফ থেকে ঋণ প্রাপ্তির শর্ত পূরণ করার জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে ডলার কিনেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের আমদানি দায় বাবদ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের ১২৭ কোটি ডলারের দায় জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পরিশোধ করা হয়। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলো থেকে কেনা ডলারের একটি অংশও ফেরত দেয়া হয়। এ কারণে জানুয়ারিতে রিজার্ভের এত বড় ক্ষয় হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের দায় সমন্বয় হওয়ায় রিজার্ভের পরিমাণ কমেছে। প্রতি দুই মাস পরপর এ দায় পরিশোধ করা হয়। আমরা ব্যাংকগুলোর চাহিদার ভিত্তিতে এখনো আমদানি দায় পরিশোধের জন্য ডলার বিক্রি করছি। এ কারণে রিজার্ভ কিছুটা কমেছে।’