চার ইসরায়েলি নাগরিকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

দখল করা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনের নাগরিকদের ওপর হামলার অভিযোগে ইহুদি বসতি স্থাপনকারী ইসরায়েলের চার নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেৌ যুক্তরাষ্ট্র।

আজ শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে অনুমোদন দিয়ে এক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় তিনি বলেন, পশ্চিম তীরে সহিংসতা ‘অসহনীয় মাত্রায়’ পৌঁছেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত ওই চার ইসরায়েলি যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তাদের সম্পদ এবং দেশটির আর্থিক ব্যবস্থার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। তবে জো বাইডেন প্রশাসন ওই চার ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেনি।

ইসরায়েলি নাগরিকের ওপর এমন নিষেধাজ্ঞাকে মার্কিন প্রশাসনের প্রথম একটি বিরল ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। মিশিগান রাজ্যে ভ্রমণ করার সময় এ ঘোষণা আসে। অঙ্গরাজ্যটিতে আরব-আমেরিকান জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ বসবাস করে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সদস্যরা হামলা চালানোর পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা আরও বেড়েছে।

দ্য আরব আমেরিকান ইনস্টিটিউট নামে একটি পরামর্শক গ্রুপের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতি আরব-আমেরিকানদের সমর্থন ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ২০২০ সালে ছিল ৫৯ শতাংশ।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েল আবারও হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাহী আদেশকে তারই ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। এটি গত বছর কিছু ব্যক্তির ওপর আরোপিত ভিসা বিধিনিষাধাজ্ঞার চেয়ে বড় মনে করা হচ্ছে।

আদেশে বাইডেন বলেছেন, পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি, বিশেষ করে অবৈধ বসতি স্থাপনকারী উগ্রপন্থিদের মাত্রাতিরিক্ত সহিংসতা, ফিলিস্তিনিদের জোর করে বাস্তুচ্যুত করা এবং সহায়-সম্পত্তি ধ্বংস করা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এসব কর্মকাণ্ড সেখানকার শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আদেশের পর এ বিষয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারী বেশির ভাগ বাসিন্দা ‘আইন মেনে চলে’।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দফতর থেকে বলছে, ইসরায়েল সব জায়গায় আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। তাই এ বিষয়ে কারও অস্বাভাবিক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন নেই।

৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলের বাহিনী। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, চলমান এ হামলায় এখন পর্যন্ত ২৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

জাতিসংঘ বলছে, পশ্চিম তীরে প্রায় ৩৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে প্রাণ দিয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত আটজন ইসরায়েলি ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হাতে নিহত হয়েছেন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.