বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪৪তম জাতীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে আজ সোমবার। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও নানা আয়োজনে গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে দিবসটি উদযাপনে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।
গতকাল রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সালাম গ্রহণ ও মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন।
এসময় উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম উদ্দিন, আনসার ও ভিডিপি একাডেমির কমান্ড্যান্ট মো. নূরুল হাসান ফরিদী, বাহিনীর উপমহাপরিচালকরা, অন্যান্য কর্মকর্তা ও আনসার-ভিডিপি সদস্যরা।
এ ছাড়া আরও উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, সংসদ সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনী প্রধান, সিনিয়র সচিবরাসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান, কূটনৈতিক ব্যক্তি, সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি ও আমন্ত্রিত অতিথিরা।
এতে বলা হয়, ১৯৪৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আনসার বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজধানী শহর থেকে সমতল ও পার্বত্যাঞ্চলসহ তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত এ বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ বাহিনীর সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর দুটি পূর্ণাঙ্গ মহিলা আনসার ব্যাটালিয়ন ও বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নসহ (এজিবি) মোট ৪২টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে।
পার্বত্যাঞ্চলে ১৬টি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ‘অপারেশন উত্তরণ’ এ যৌথ ও একক ক্যাম্পে দেশের অখণ্ডতা রক্ষা, পাহাড়ি বাঙালি সম্প্রীতি রক্ষা এবং সন্ত্রাস দমনে দায়িত্ব পালন করছেন। এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে ১৯ জন সদস্য আত্মোৎসর্গ করেছেন। এ ছাড়া পার্বত্যাঞ্চলের হিল আনসার ও হিল ভিডিপি সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
সমতল এলাকায় আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা জাতীয় সংসদ সচিবালয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, রাষ্ট্রীয় তোষাখানাসহ সমতল এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ মোবাইল কোর্ট ও ভেজালবিরোধী অভিযান, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন, চোরাচালান রোধ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, মেট্রোরেল, পায়রা বন্দর, বিমানবন্দর, প্রেষণে এসএসএফ, র্যাব, এনএসআই, ডিজিএফআইয়ে দায়িত্ব পালন করছে।
বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের (এজিবি) সদস্যরা কূটনৈতিক জোন ও বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছে এবং বর্তমানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তায় কাজ করছে।
বর্তমানে দেশের বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, ইপিজেডসহ গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় প্রায় ৫৫ হাজার অঙ্গীভূত আনসার সদস্য নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব ঈদ, পূজা-পার্বনসহ বর্ষবরণ, শপিং মল, বাণিজ্য মেলা ও বইমেলা, রেলস্টেশন, ট্রাফিক কন্ট্রোলসহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সাধারণ আনসার সদস্যরা জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করে।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আইশৃঙ্খলা রক্ষা, ব্যালট বাক্স, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও ভোটারদের শৃঙ্খলভাবে ভোটদান নিশ্চিত করতে ৫ লাখ ১৭ হাজার, ১৪৩ জন সদস্য দায়িত্বপালন করেছে।