বাংলাদেশকে যেসব বার্তা দিল যুক্তরাষ্ট্র

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রথমবারের মতো ঢাকা সফর করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল। ২৪-২৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরে এসে বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ঢাকা সফরকালে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদল বেশ কয়েকটি বার্তা দিয়েছে। এসব বার্তার মধ্যে রয়েছে- দুদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরালো করা, বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানো, মানবাধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন, শ্রমিক অধিকার বাস্তবায়ন ইত্যাদি।

এ ছাড়া বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বিএনপির নেতাদের কারাগারে থাকার বিষয়টিও স্থান পায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের পক্ষে বিভিন্ন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল এইলিন লাউবেখার, উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার ও ইউএসএআইডির সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার।

 

ঢাকা সফরকালে মার্কিন প্রতিনিধিদল পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

 

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে প্রতিনিধিদল বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ঢাকা সফরকালে মার্কিন প্রতিনিধিদল বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।

বৈঠকের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক দৃশ্যপট ও কারাগারে থাকা বিরোধীদলের হাজার হাজার কর্মীর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী দিনে এ সম্পৃক্ততা চলমান থাকবে।

ঢাকা সফরকালে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করেন মার্কিন প্রতিনিধিদল।

মার্কিন ডেপুটি চিফ অব মিশন হেলেন লাফেভের বাসভবনে ওই বৈঠক হয়। বৈঠকে অংশ নেন- অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সাংবাদিক জিল্লুর রহমান, অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. আমেনা মহসিন, মানবাধিকারকর্মী শিরিন হক প্রমুখ।

বৈঠকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়।

মার্কিন প্রতিনিধিদল পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় একযোগে কাজ করার বিষয়ে জোর দেন।

মার্কিন প্রতিনিধিদল শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে আলোচনা করেছেন।

মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফরের বিষয়ে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছিল- ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে পারস্পরিক স্বার্থের অগ্রগতির জন্য কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে প্রতিনিধিদল আলোচনা করবেন। মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিকে এগিয়ে নেওয়া, মানবাধিকারকে সমর্থন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, আন্তর্জাতিক হুমকির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক সহনশীলতার শক্তিকে এগিয়ে নিতে এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রচারে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.