শাহজালালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে বিমান

এ বছর অক্টোবরে যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এই টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং করতে পারবে কি না, তা নিয়ে ছিল সংশয়। তবে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যন্ত্রপাতি কিনছে বিমান। একই সঙ্গে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সহায়তায় গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে এয়ারলাইনটি।

ফলে বিমান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালে আন্তর্জাতিক মানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দিতে সক্ষম বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে জাইকা ও বিমান যৌথভাবে ‘হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি উন্নত করা’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে বিমানের পরিচালক (গ্রাহক সেবা) মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী প্রকল্পের অগ্রগতি ও বিভিন্ন দিক উপস্থাপন করেন।

মতিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) বিশেষজ্ঞ দল প্রশিক্ষণ দিয়েছে। জাইকার কারিগরি সহযোগিতা প্রকল্পের অধীনে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ২০২২ সালের মার্চ মাসে দুই বছর মেয়াদি একটি যৌথ প্রকল্প গ্রহণ করে, যা ৩০ এপ্রিল শেষ হবে। প্রকল্পটি জাইকার সহযোগিতা ও অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।

প্রকল্পের অধীনে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধিকল্পে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রণয়ন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেশে-বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান, গ্রাউন্ড সার্ভিস ইক্যুইপমেন্ট (জিএসই) ক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণ, কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি, র‌্যাম্প সার্ভিস উন্নয়নসহ নানা প্রশিক্ষণ ও নীতিমালা প্রণয়নে বিমানকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়েছে জাইকার বিশেষজ্ঞ দল। ফলে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সক্ষমতা আগের চেয়ে বেড়েছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, বিমানের সেবার মান বাড়ানোর জন্য সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। জাপানের এই প্রশিক্ষণ বিমানকে তৃতীয় টার্মিনালে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং করার জন্য সহায়ক হবে। তৃতীয় টার্মিনালে আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে বিমানের কর্মীদের প্রশিক্ষণের পাশপাশি যন্ত্রপাতিও কেনা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, আমাদের রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইনের সক্ষমতা বৃদ্ধি আমাদের জন্য আনন্দের। বিমানের সক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে যাত্রীরা আরও উন্নত সেবা পাবে। জাপানের প্রশিক্ষণের ফলে বিমান আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে পারবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকার প্রধান তোমোহিদি ইচিগুচি বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বিমানের এই প্রশিক্ষণ বিমানকে আরও উন্নত সেবা দিতে সহায়তা করবে। বিমানের কর্মীরা উন্নত সেবা দেওয়ার ফলে বাংলাদেশের এভিয়েশন খাত আরও উন্নত হবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম বলেন, থার্ড টার্মিনালকে কেন্দ্র করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বিপুল সংখ্যক নতুন জিএসই ইক্যুইপমেন্ট ও যন্ত্রপাতি কিনেছে। নতুন জনবল নিয়োগের পাশাপাশি গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের সঙ্গে যুক্ত জনবলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অধীনে র‌্যাম্প সার্ভিস, জিএসই অপারেশন্স, জিএসই প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড মেইনট্যানেন্স, ইমপোর্ট কার্গো ও এক্সপোর্ট কার্গো খাতে পাঁচটি টাস্কফোর্স গঠিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জাপানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের অত্যাধুনিক অপারেটিং প্রসিডিউর অনুসরণে এসওপি প্রণয়ন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মীদের জন্য নতুন ইউনিফর্ম দেওয়ার পাশাপাশি ভালো কাজের উৎসাহ বৃদ্ধি ও ইনসেনটিভেরও ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।

শফিউল আজিম বলেন, বর্তমান টার্মিনালে অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে চাইলেও আরও ভালো সম্ভব নয়। তবে তৃতীয় টার্মিনাল প্রযুক্তিনির্ভর, সেখানে বিমান আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে সক্ষম।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.