টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বিশ্বের বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের মাধ্যমে তাদের জনসম্পদে রূপান্তর করতে হবে।
আজ বুধবার (১৫ মে) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘আইসিপিডি-৩০: জনসংখ্যাগত বৈচিত্র্য ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক বৈশ্বিক সংলাপ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী ইভেন্টের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ইউএনএফপিএর সঙ্গে বাংলাদেশ, বুলগেরিয়া ও জাপান একত্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজক। এ সংলাপ পরিবর্তনশীল জনসংখ্যার চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগগুলো খুঁজে বের করে বিশ্বের আলোচনার একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যাগত লভ্যাংশের রূপান্তর একটি সমৃদ্ধ বৈশ্বিক ব্যবস্থা তৈরি করতে সক্ষম হবে।,
শেখ হাসিনা বলেন, এ লক্ষ্য অর্জনে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বিশেষ করে মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা খাতে আন্তর্জাতিক অর্থায়নের পরিমাণ ও সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিতের জন্য উন্নয়ন সহযোগী ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আরো আন্তরিক হতে হবে।
সরকার প্রধান বলেন, ঢাকায় অনুষ্ঠিত এ বৈশ্বিক সংলাপ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ জাতিসংঘে অনুষ্ঠেয় ‘সামিট অব দ্য ফিউচার’-এর জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নে সহায়ক হবে।
জনসংখ্যা ও উন্নয়ন বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ‘সামিট অব দ্য ফিউচার’-এর ঘোষণাপত্রে দৃঢ় রাজনৈতিক প্রত্যয় ব্যক্ত করবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য অপরিহার্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার আরো কার্যকর ভূমিকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সেখানে মানুষ ইসরায়েলি আগ্রাসন ও দখলদারত্বের বিরুদ্ধে প্রতিদিন বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা সেখানে সবার বিশেষ করে নারী ও শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে আরো কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে জনস্বাস্থ্যসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে বিশ্বের সব মানুষের বিশেষ করে মা, শিশু ও বয়স্ক জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বৈশ্বিক সহযোগিতা আরো জোরদারে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
সরকার প্রধান বলেন, একইসঙ্গে সংঘাত ও রাজনৈতিক কারণে উপদ্রুত ও বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর দিকে মনোযোগ দেয়াও অত্যন্ত জরুরি বলে আমি মনে করি।
এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই-বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং ইসরায়েলের গণহত্যা ও আগ্রাসনের ফলে নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জনগণের কথা। বিপুলসংখ্যক নারী ও শিশু ফিলিস্তিনে আজ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ইউএনএফপির নির্বাহী পরিচালক ড. নাতালিয়া কানেম, মালদ্বীপের সামাজিক ও পরিবার উন্নয়নমন্ত্রী আইশাথ শিহাম, কিরিবাতির নারী, যুব, ক্রীড়া ও সামাজিক বিষয়কমন্ত্রী মার্টিন মোরেত্তি, জাপানের পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় উপমন্ত্রী ইয়াসুশি এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বক্তব্য রাখেন। বুলগেরিয়া সরকারের প্রতিনিধিও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
