হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ কাজের ৯৭ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মে) থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ কাজ সরজমিনে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি একথা জানান।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত পরিদর্শনে যা দেখলাম সব মিলিয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট। এখন পর্যন্ত টার্মিনাল ভবনের ৯৭ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, ৩% এর মতো কাজ বাকি আছে। তবে এই ৩% এর মধ্যে কো-অর্ডিনেশন ও টেস্টিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়ে গেছে।
মন্ত্রী বলেন, টার্মিনাল ভবনটির কাজ খুব সুন্দর হয়েছে। ভবনটা অনেক দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। তবে এর সফলতা নির্ভর করে এর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের ওপর। এটি সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, মেনটেইনেন্স ভালোভাবে করতে হবে। বাংলাদেশের আবহাওয়া বিবেচনা করলে এখানে ধুলাবালি রয়েছে, মাকড়সা-পাখি বাসা বাঁধার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা যেন এখানে বাসা বাঁধতে না পারে তাই নিয়মিত মেনটেইনেন্স করতে হবে। জাপানি প্রতিষ্ঠানকে আমি এসব কথা বলেছি। আমি খুবই আশাবাদী সিভিল এভিয়েশন এই টার্মিনালকে ভালোভাবে পরিচালনার জন্য কর্মীদের প্রস্তুত করছে।
এই বিমানবন্দর কবে নাগাদ চালু হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে কোথাও এভাবে সুনির্দিষ্ট করে তারিখ বলতে পারে না। কারণ এটা হাইলি টেকনিক্যাল একটা কাজ। এটা কোনোভাবেই পরিকল্পনা করে একদম টাইম মতো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। তবে আমি আশা করি কর্তৃপক্ষ যথাসময়েই এটি চালু করতে পারবে।
নতুন টার্মিনালের সুযোগ সুবিধা নিয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য বিমানবন্দর থেকে এখানে চেক-ইন কাউন্টার, ইমিগ্রেশন কাউন্টার অনেক বড় করা হয়েছে। আমি কিছুদিন আগে জার্মানিতে গিয়েছিলাম। সেখানকার একটি বিমানবন্দরে দেখলাম মাত্র ছয়টি ইমিগ্রেশন কাউন্টার। আমার ইমিগ্রেশন করতে তিন ঘণ্টা সময় লেগে গিয়েছিল। আমাদের এখানে ৫৪টা ইমিগ্রেশন করা হয়েছে। আশা করছি সব বয়সী ও শ্রেণী পেশার লোকজন ভালো সার্ভিস পাবেন।
টার্মিনালের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী দ্বিতীয় রানওয়ে তৈরি হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান রানওয়েতে আইএলএস (ইন্সট্রুমেন্ট অব ল্যান্ডিং সিস্টেম) সিস্টেম উন্নত করা হচ্ছে। রাডারগুলো উন্নত করা হচ্ছে। তবে, দ্বিতীয় রানওয়ে নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। যেহেতু আশেপাশে অনেক বিল্ডিং হয়ে গেছে, আমরা দেখছি, কিভাবে দ্বিতীয় রানওয়ে চালু করা যায়।
থার্ড টার্মিনাল সম্পন্ন হলে লাগেজ হ্যান্ডলিং দ্রুত হবে কিনা, দায়িত্ব কার কাছে যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, পৃথিবীর যেকোনো দেশে এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। যাত্রীরা মনে করে প্লেন থেকে নেমে যেতে যেতে লাগেজ আমার হাতে আসবে, এটা কখনো সম্ভব হয় না। আমরা উন্নতি করার চেষ্টা করছি। আমাদের এখানে বর্তমানে প্রথম লাগেজ পেতে এখন ১৫ মিনিট লাগে, শেষেরটি পেতে প্রায় ৪০ মিনিট লাগে। এর উন্নতির জন্য আমরা ইক্যুইপমেন্ট কিনেছি। চেষ্টা করছি আরও দ্রুত দেয়া যায় কিনা।
গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এর দায়িত্ব প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, জাপানের সাথে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এর জন্য আমরা জয়েন্ট ভেঞ্চারের কথা বলেছি। কিন্তু, এখন পর্যন্ত তারা নির্দিষ্টভাবে জানায়নি তাদের কোন প্রতিষ্ঠান যুক্ত হবে। আশা করছি তারা দ্রুতই এটি জানাবে।