নারীরা বেশী দুর্নীতির শিকার : টিআইবি

TIB_Womenশিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ সরকারের বিভিন্ন জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে নারীরা সবচেয়ে বেশী দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

টিআইবির ধানমণ্ডি কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘নারীর অভিজ্ঞতায় দুর্নীতি : বাংলাদেশের দুইটি ইউনিয়নের চিত্র’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ চিত্র প্রকাশ করা হয়েছে।

২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত গাজীপুর ও জামালপুর জেলার দু’টি ইউনিয়নের ওপর এ গবেষণা চালায় টিআইবি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক খাতে সেবা গ্রহণ করতে গিয়ে নারীরা প্রত্যক্ষভাবে দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন। যার মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা খাতে উপবৃত্তি, স্থানীয় সরকার খাতে মাতৃত্বকালীন ভাতা, গাছ পাহারা দেওয়ার কাজ, ভিজিডি/ভিজিএফ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (পুলিশ), এনজিও, বিচারিক সেবা খাতে নারী নির্যাতন মামলা, মাটি কাটার কাজ, ব্যাংক, পল্লীবিদ্যুৎ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সেবা নিতে গিয়ে নারীরা চরম দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন।

এমনকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নারী কোটায় নিয়োগ, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে টার্গেট পূরণে জন্য রোগী কেনা ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সেবা নিতে গিয়েও নারীদের দুর্নীতির শিকার হতে হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘নারী নির্যাতন মামলা’ পরিচালনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীকে নিয়মবহির্ভূত টাকা দিতে হচ্ছে। যেমন থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশকে দুই থেকে পাঁচ হাজার, বাড়িতে এসে মামলা অনুসন্ধানের জন্য ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, মামলা কোর্টে উঠানোর জন্য ৫০০ টাকা, আসামী ধরতে যাওয়ার জন্য পুলিশের গাড়ির তেলের খরচ ও যাতায়াত বাবদ ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা, প্রতিবার শুনানীতে ঘুষ বাবদ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দু’টি ইউনিয়নের চিত্র হলেও সারা বাংলাদেশের চিত্র মোটামুটি একই রকম। দেশে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিককরণ করা হয়েছে, যার প্রধান শিকার নারী।’

টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. সুলতানা কামাল বলেন, ‘টিআইবির গবেষণায় মূল যে চিত্র উঠে এসেছে তা হল দুর্নীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীরা মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কারণ নারীকে দুর্নীতি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা সহজ।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— টিআইবির উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের, রিসার্চ এ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান, রিসার্চ এ্যান্ড পলিসি বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহজাদা এম আকরাম প্রমুখ।

রিসার্চ এ্যান্ড পলিসি বিভাগের সাবেক ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. শরীফ আহমেদ চৌধুরী প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.