বিশেষ প্রতিনিধি, যুক্তরাষ্ট্র : যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের অবিস্মরণীয় নেতা হিসেবে বিশ্ববাসীর হৃদয়ে চির জাগরুক থাকবেন। তিনি ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েও শোষিত ও বঞ্চিত বাঙালি জাতির অধিকারের কথা বলেছেন। তাই ১৭ মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে একটি অবিস্মরণীয় দিন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৫তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে স্থানীয় সময় সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন সভাপতিত্ব করেন। আলোচনা সভায় ব্রাজিলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজারুল কায়েস, নাট্য ব্যক্তিত্ব জামাল উদ্দিন হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী, ড. প্রদীপ কর, সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বক্তৃতা করেন।
আলোচনা সভায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাঙালি জাতি যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জাতির পিতার আদর্শ ও মানবিক গুণাবলীর অপূর্ব সমন্বয় করে গড়ে উঠতে পারে সেজন্য ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। যাতে বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ শিশুরা জাতির পিতার মতো মানুষের প্রতি মমত্ববোধ ও আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশসেবায় ব্রতী হতে পারে।
স্পিকার বলেন, জাতির পিতার পথ অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। ফলে বিশ্বব্যাপী মন্দা সত্তে¡ও বাংলাদেশ বিগত পাঁচ বছর ধরে ছয় শতাংশের বেশী প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, রপ্তানি আয়, রেমিটেন্স বৃদ্ধি পেয়েছে। মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল।
স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোমেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে ১৯৬৬ সালে ৬-দফা দিয়েছিলেন। জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সাধারণ মানুষের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে সকল নাগরিককে অঙ্গীকার বদ্ধ হতে হবে।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী, মহাজোটের নেতৃবৃন্দ, নিউইয়র্কের বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সবিতা দাসের নেতৃত্বে বহ্নিশিখা শিল্পীগোষ্ঠী সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ লাউঞ্জ উদ্বোধন:
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী স্থানীয় সময় সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘বাংলাদেশ লাউঞ্জ’ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ হলের দুতলার ব্যালকনিতে লাউঞ্জটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিরা লাউঞ্জটি ব্যবহার করতে পারবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিসহ জাতিসংঘে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিনিধিদেরকে লাউঞ্জটি বেশি বেশি ব্যবহার করার আহবান জানিয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, এখানে বহুপাক্ষিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচিত হবে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সদস্যদের সহায়তা করবে। তিনি এই লাউঞ্জ দেয়ার জন্য জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানান।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘে সদস্যপদ পাওয়ার ৪০ বছর পর এ লাউঞ্জটি পেয়েছে। তিনি লাউঞ্জটির সর্বোচ্চ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। – See more at: http://www.ittefaq.com.bd/national/2015/03/17/16550.html#sthash.F99tQydo.dpuf