নারী শ্রমিক পেতে কঠিন শর্ত সৌদির, হুমকিতে শ্রমবাজার

nari-sm20161120200418বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নারী শ্রমিক চায় সৌদি আরব। তবে কঠিন শর্ত জুড়ে দিয়েছে দেশটি। সেই শর্তানুযায়ী একশ জন পুরুষ শ্রমিক পাঠাতে হলে, এর বিপরীতে বাধ্যতামূলকভাবে ২৫ জন নারী শ্রমিককে পাঠাতে হবে।

মৌখিকভাবে দেওয়া এমন শর্ত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জনশক্তি রফতানিকারকরা। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ নারী শ্রমিক না দেওয়ায় পুরুষ শ্রমিকদের ভিসা স্ট্যাম্পও বন্ধ রেখেছে ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাস। ফলে দেশটিতে শ্রমবাজার উন্মুক্ত হওয়া স্বত্ত্বেও কর্মী পাঠানো যাচ্ছে না।

অপরদিকে, সৌদি আরবের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো চুক্তি ও চাহিদা মত কর্মী পাচ্ছে না। যা দু’দেশের ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এতে শ্রমবাজারে দেখা দিয়েছে হুমকি ও অস্থিরতা।

সৌদি দূতাবাসের এমন আচরণ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি লঙ্ঘন ও অনৈতিক বলে অভিযোগ করছেন জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রা (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি)।

এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে রোববার (২০ নভেম্বর) অভিযোগও জানিয়েছেন বায়রা নেতারা।

এ বিষয়ে বায়রা মহাসচিব মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘সৌদি দূতাবাস বলছে, পুরুষ কর্মীদের যত বই (পাসপোর্ট) আমরা জমা দেবো, তার ২৫ শতাংশ নারীদের বই জমা দিতে হবে। এখন এত নারী আমরা কোথায় পাব?’

তিনি বলেন, এটা অন্যায়, এটা অসম্ভব। কেউ আমরা ২৫ শতাংশ মেয়ে দিতে পারবো না। ফলে পুরুষ কর্মীদের বই জমা হচ্ছে না। এমনকি জমা হওয়া বইয়ে স্ট্যাম্পও দিচ্ছে না।

বায়রা মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরবের দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে এ বিষয়টি উল্লেখ নেই বলে জানি। তবে যুক্তির খাতিরে যদি ‘আছে’ বলে ধরে নেওয়া হয়, তাহলে যে পরিমাণ নারী শ্রমিক এখন পর‌্যন্ত দেশটিতে গেছে (৫০ হাজার প্রায়), তার ৭৫ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক এখনও সৌদি আরবে যায়নি। তাহলে কেন এমন আচরণ করছে সৌদি দূতাবাস।

তবে নারী শ্রমিক পেতে সৌদি দূতাবাসের এ ‘অন্যায় আবদারের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবে সরকার।

এ প্রসঙ্গে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ বলেন, ঢাকার সৌদি দূতাবাস পুরুষ শ্রমিকের বিপরীতে বাধ্যতামূলকভাবে ২৫ শতাংশ নারী শ্রমিক চেয়েছে বলে আমাদের রিক্রুটিং এজেন্সির কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। যদিও সরকারকে তারা (দূতাবাস) আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে আমরা দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলবো, সেখানে কাজ না হলে দু’দেশের যৌথ কমিটিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।

দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ রাখে সৌদি আরব। তবে নারী কর্মীদের উপর নির‌্যাতনের অভিযোগ এনে ফিলিপাইনসহ বেশ কিছু দেশ সৌদিতে নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করে। এরপর বাংলাদেশের নারী শ্রমিকদের জন্য বাজার উন্মুক্ত করে সৌদি আরব। তবে দেশটির চাহিদা অনুযায়ী নারী কর্মী পাঠাতে পারেনি বাংলাদেশ। পরে পুরুষ কর্মদের জন্য বাজার উন্মুক্ত করলেও এবার তাদের সঙ্গে নারী কর্মী দেওয়ার কঠিন শর্ত জুড়ে দিয়েছে সৌদি আরব।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.