নীতিমালা সংশোধন হচ্ছে : ৯০ প্রবাসী বাংলাদেশী পাবেন সিআইপি কার্ড

CIP-NRদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদানকে আরও উৎসাহিত করতে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি (এনআরবি) নির্বাচন সংক্রান্ত নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সংশোধিত নীতিমালায় বাড়ানো হচ্ছে সিআইপি কার্ডের সংখ্যা। এ ছাড়া মনোনয়নের যোগ্যতাও শিথিল করা হচ্ছে।

জানা গেছে, সিআইপি (এনআরবি) নীতিমালা সংশোধনের জন্য সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করা হয়। এতে সরকারের সব দফতরের প্রতিনিধিরা ছিলেন। কমিটির বৈঠকে নীতিমালার একটি সংশোধিত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এখন মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদনের জন্য এটি পাঠানো হবে। অনুমোদন পাওয়ার পর তা গেজেট আকারে জারি করা হবে।

বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠিয়ে যারা দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে সহায়তা করছেন তাদের সিআইপি (এনআরবি) হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়। স্বীকৃতিস্বরূপ প্রত্যেক প্রবাসীকে সিআইপি কার্ড দেওয়া হয়।

সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী তিন ক্যাটাগরিতে ৯০ জন প্রবাসী বাংলাদেশীকে সিআইপি কার্ড দেওয়া হবে। এর মধ্যে শিল্পক্ষেত্রে সরাসরি বিনিয়োগকারী প্রবাসী ২০ জন বাংলাদেশী, বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো ৫০ জন এবং বিদেশে বাংলাদেশী পণ্যের আমদানিকারক প্রবাসী বাংলাদেশী ২০ জন সিআইপি কার্ড পাবেন।

বর্তমানে শিল্পক্ষেত্রে সরাসরি বিনিয়োগকারী প্রবাসী ১০ জন, বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো ১০ জন এবং বিদেশে বাংলাদেশী পণ্যের আমদানিকারক প্রবাসী বাংলাদেশী ৫ জনকে সিআইপি কার্ড দেওয়া হয়।

এ ছাড়া মনোনয়নের জন্য শিল্পক্ষেত্রে সরাসরি বিনিয়োগকারীদের যোগ্যতাও কমানো হচ্ছে। ৫ লাখ ডলারের পরিবর্তে ৩ লাখ ডলার দেশে বিনিয়োগ করলেই যেকোনো প্রবাসী সিআইপি কার্ড পাবেন। রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীদের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং চ্যানেল বাদ দিয়ে বৈধ চ্যানেলে দেড় লাখ ডলার পাঠালেই সিআইপির জন্য বিবেচিত হবেন ওই প্রবাসী।

বিদেশে দেশীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রেও সীমা কমানো হয়েছে। আগে ৫ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করলে ওই প্রবাসী সিআইপির জন্য বিবেচিত হতেন। কিন্তু নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ৩ লাখ ডলারের দেশী পণ্য আমদানি করলে তাকে সিআইপি কার্ড দেওয়া হবে।

অন্যদিকে দেশে-বিদেশে ঋণখেলাপী, করখেলাপী, বিদেশী ক্রেতার সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধ থাকলে, আদালতে সাজাপ্রাপ্ত হলে কিংবা সাজা ভোগের পাঁচ বছর অতিবাহিত না হলে এবং ভুল তথ্য দিয়ে আবেদন করলে কোনো প্রবাসী সিআইপি (এনআরবি) হওয়ার আবেদন করতে পারবেন না।

সিআইপিরা যে সব সুবিধা পাবেন : সিআইপি (এনআরবি) হিসেবে নির্বাচিতরা এক বছরের মেয়াদকালে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নীতিনির্ধারণী কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। দেশে ও বিদেশে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অগ্রাধিকার পাবেন এবং বিভিন্ন জাতীয় দিবসে বিদেশে বাংলাদেশ মিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হবেন।

সিআইপি হিসেবে নির্বাচিতরা ব্যবসা-সংক্রান্ত ভ্রমণে বিমান, রেল, সড়ক ও জলযানে আসন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। তাদের স্ত্রী, সন্তান ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন সুবিধাপ্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মতো সুযোগ-সুবিধা পাবেন এবং তাদের বিনিয়োগ ফরেন প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট আইন অনুসারে সংরক্ষণ হবে, বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহার এবং স্পেশাল হ্যান্ডলিংয়ের সুবিধা পাবেন।

তবে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়া সরকার যে কোনো সময় এ সব সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করতে পারবে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.