ফ্রান্সের আল্পস পর্বতমালায় বিধ্বস্ত বিমানের সহকারী পাইলট নিজেই বিমানটি বিধ্বস্ত করতে চেয়েছিলেন। ফ্রান্সের এক কর্মকর্তা বিধ্বস্ত বিমানের ব্ল্যাক বক্সের ভয়েস রেকর্ডার থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে এ কথা বলেছেন। বিবিসিতে প্রকাশিত এক সংবাদে এমন তথ্যই জানানো হয়।
ব্রাইস রবিন নামে ফ্রান্সের মার্শেইয়ের এক কর্মকর্তা ভয়েস রেকর্ডার থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বলেন, ঘটনার সময় ককপিটে বিমানটির সহকারী পাইলট একাই ছিলেন। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই বিমানটির ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন। ওই সময় বিমানটির পাইলট ককপিটের বাইরে ছিলেন এবং দরজা আটকানো ছিল। তিনি আরও বলেন, ওই সময় ককপিট পুরোপুরি নীরব ছিল এবং পাইলট ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। আর শুধু বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগ মুহূর্তেই যাত্রীদের চিৎকার করতে শোনা যায়। ২৮ বছর বয়সী পাইলট আন্দ্রেস লুবিৎজ বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত জীবিত ছিলেন।
ব্রাইস রবিন সাংবাদিকদের আরও বলেন, একপর্যায়ে বিমানটির প্রধান পাইলট সহকারী পাইলটকে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ নিতে বলেন বলেও বিমানের ভয়েস রেকর্ডারে শোনা যায়। একই সময় একটি আসন পেছনের দিকে আসার শব্দ এবং একটি দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ পাওয়া যায়। সে সময় বিমানটি সহকারী পাইলটের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। একপর্যায়ে তিনি বিমানের ফ্লাইট পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেন, যাতে তিনি বিমানটি ধ্বংস পারেন।
ফ্রান্সের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, পাইলট যখন ভেতরে আসতে চাইছিলেন; সহকারী পাইলট তখন কেবিনের দরজা খুলে দিতে অস্বীকৃতি জানান। এর পরই তিনি বিমানটিকে নিচে নামানোর সুইচ টিপে দেন। তিনি বলেন, ‘তিনি কেন এটি করলেন, এর কারণ আমরা এখনও জানতে পারিনি। কিন্তু দৃশ্যত মনে হচ্ছে, বিমানটিকে ধ্বংস করতেই তিনি এ কাজ করেছেন। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রকেরা বারবার বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু কোনো প্রতি উত্তর পাওয়া যায়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই সহকারী পাইলট কট্টরপন্থা কিংবা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না—এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে জার্মান কর্তৃপক্ষ তাঁর অতীত এবং ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে আরও তথ্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।’
জার্মানির বিমান পরিবহন সংস্থা জার্মানউইংসের এ-৩২০ এয়ারবাসটি গত মঙ্গলবার ১৫০ আরোহী নিয়ে ফ্রান্সের বার্সালোনেত্তি এলাকায় পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি স্পেনের বার্সেলোনা থেকে জার্মানির ডুসেলডর্ফ শহরে যাচ্ছিল। গতকাল বুধবার বিমানটির উদ্ধারকাজ শুরু হয়। ছয় হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত দুর্ঘটনার স্থানটি প্রত্যন্ত হওয়ায় উদ্ধার অভিযান শেষ করতে কয়েক দিন লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
আরও খবর