বিশ্বজুড়ে নিরাপদ অভিবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতের লক্ষ্যে গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (জিএফএমডি)-এর তিন দিনব্যাপী নবম সম্মেলন আজ শনিবার ঢাকায় শুরু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি গ্রেগরি মানিয়াতিস, ইউএন উইমেনের উপ-নির্বাহী পরিচালখ লক্ষী পুরি, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মহাপরিচালক গাই রেডার, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক উইলিয়াম ল্যাসি সুইং, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল উ হংবো উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রীও উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ১২ ডিসেম্বর অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্য দেবেন।
জিএফএমডি চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ এই সম্মেলনের আয়োজক। বিশ্বের ১২০টির বেশি দেশ, আন্তর্জাতিক সংস্থা, নাগরিক সমাজ ও দেশি-বিদেশি বেসরকারি সংস্থার সাত শতাধিক প্রতিনিধি এবারের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। ২০১৫ সালে তুরস্ক বাংলাদেশের কাছে চেয়ারম্যান পদ হস্তান্তর করে। আগামী ১২ ডিসেম্বর সমাপনী অনুষ্ঠানে চেয়ারের দায়িত্ব জার্মানির হাতে তুলে দেবে বাংলাদেশ।
এবারের সম্মেলনে ১৫টি দেশের মন্ত্রীরা অংশ নেবেন। ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর দেশটির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। এ লক্ষ্যে গতকাল শুক্রবার তিনি ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। ঢাকায় সম্মেলনে অংশগ্রহণ ছাড়াও তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে পারেন বলে জানা গেছে। আগামী রবিবার সকালে তার ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
অন্যদিকে মূল সম্মেলনের আগে জিএফএমডির সুশীল সোসাইটি দিবসের সমাপনী অনুষ্ঠানে গতকাল শুক্রবার পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ সীমিত সম্পদের দেশ হওয়া স্বত্বেও এখানে আশ্রয় নিতে আসা মানুষদের জন্য সর্বোচ্চটুকু করছে। সকল দেশকে এভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, জিএফএমডি সিভিল সোসাইটি দিবসে যেসব আলোচনা হয়েছে, সেগুলো কার্যকর করার মাধ্যমে অভিবাসীদের জন্য নিরাপদ পৃথিবী গড়তে হবে। প্রথম দিনের অধিবেশনে তিনি বলেছিলেন, বিশ্ব সম্প্র্রদায় অভিবাসন ইস্যুতে একটি গ্লোবাল কমপ্যাক্ট প্রণয়নে ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আগামী ২০১৮ সালে বিশ্ব নেতারা এ চুক্তিটি অনুমোদন করবেন। তবে সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি জানান, চুক্তির জন্য ২০১৮ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করলে চলবে না। পুরো পৃথিবীর জন্য টেকসই উন্নয়নের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে। সুশীল সমাজের শক্তিশালী ভূমিকার মাধ্যমে জলবায়ুর মতো বিষয়ে একটি শক্তিশালী নীতিমালা তৈরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অভিবাসনের ক্ষেত্রে তাই নাগরিক সমাজের শক্তিশালী ভূমিকা জরুরি। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জিএফএমডি সিভিল সোসাইটির সমন্বয়ক কলিন রাজা, আইসএমসির পরিচালক জন বিংহাম।
উল্লেখ্য, অভিবাসন ও উন্নয়ন নিয়ে জাতিসংঘের উদ্যোগে এক দশক আগে জিএফএমডি সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। গত বছর তুরস্কের কাছ থেকে বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান পদ লাভ করে। ২০০৭ সালে বেলজিয়ামে প্রথম এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ অষ্টম সম্মেলন ২০১৫ সালে তুরস্কে অনুষ্ঠিত হয়।