আইসিসি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা মুস্তফা কামালের

kamal-দেশে ফিরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন সংস্থাটির সভাপতি ও বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি। বুধবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেছেন, ‘আমার পদত্যাগপত্র প্রস্তুত। এখন যা কিছু বলব তা হবে আইসিসির সাবেক সভাপতি হিসেবে আমার বক্তব্য।’

থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে বুধবার দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন তিনি। সেখানেই আইসিসিতে তার পরবর্তী অবস্থান নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেছেন, ‘আইসিসির গঠনতন্ত্রের ৩.৩(বি) ধারা অনুযায়ী আইসিসি আয়োজিত সকল টুর্নামেন্টের ট্রফি বিজয়ী দলকে প্রদানের এখতিয়ার সভাপতির। কিন্ত আমাকে এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ফাইনালের আগের দিন আনঅফিসিয়াল মিটিংয়ে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নিয়ে আমার দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করা অথবা ওই বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছিল আমাকে। কিন্তু দেশের ১৬ কোটি মানুষের আবেগ এবং আমাদের ক্রিকেটের স্বার্থে আমি এ দুটির কোনোটিতেই রাজি হইনি। কারণ আমি ভুল কিছু বলিনি।’

মুস্তফা কামাল আরও অভিযোগ করেছেন, ‘কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচে জায়ান্ট স্ক্রিনে জিতেগা জিতেগা, ইন্ডিয়া জিতেগা কথাটি ভেসে উঠছিল। এ ছাড়াও ম্যাচে কোনো স্পাইডার ক্যামেরাও ছিল না। আমি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি আইসিসির সিইওকে জানাই। এর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

ভূমিকাসূচক এই বক্তব্যের পর তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেছেন।

উল্লেখ্য, একাদশতম বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে বেশকিছু আপত্তিকর সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন ম্যাচের দুই আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড ও আলিম দার। ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে আসর থেকে বিদায় নিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ম্যাচশেষে আম্পায়ারদের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। একই কারণে আইসিসিরও সমালোচনা করেছেন তিনি। তার এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছেন আইসিসির অন্য কর্মকর্তারা। বিশেষ করে সংস্থাটির ক্ষমতাধর ভারতীয় চেয়ারম্যান নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের ক্ষোভটাই বেশী পরিলক্ষিত হয়েছে। যার প্রভাব দেখা গেছে ফাইনাল ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সময়। নিয়মানুযায়ী বিজয়ী দলের হাতে সভাপতির বিশ্বকাপ ট্রফি তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও শ্রীনিবাসন সেই ট্রফি চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ানদের হাতে তুলে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, পুরস্কারের মঞ্চে মুস্তফা কামালকে উপস্থিত হতেও দেওয়া হয়নি। অথচ ওই সময় তিনি স্টেডিয়ামেই ছিলেন।

বিষয়টিতে অপমানিত বোধ করার পাশাপাশি শ্রীনিবাসনদের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মুস্তফা কামাল। শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে আইসিসির গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগও করেছেন তিনি।

গত বছর মুস্তফা কামাল দায়িত্ব গ্রহণের আগেই আইসিসি সভাপতির প্রায় সব নির্বাহী ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নির্বাহী ক্ষমতাসম্পন্ন চেয়ারম্যানের একটি পদ নতুনভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। সেই পদেই আছেন শ্রীনিবাসন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.