ঢাকা: দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে আকাশ পথে ভাড়া নিয়ে অনেক দিন ধরেই চলেছে অরাজকতা। যাত্রীদের অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স বিমান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ রুটে না থাকার সুযোগে বেসরকারি এয়ারলাইন্সসমূহ ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করেছে।
তবে আকাশ পথে আকাশ ছোঁয়া ভাড়ার বিরুদ্ধে এক প্রকার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। অভ্যন্তরীণ রুট চালু উপলক্ষে ট্যাক্সসহ মাত্র ২৭০০ টাকা ভাড়া অফার করেছে। সব রুটেই এক ভাড়া। যদিও বিমানের এই বিশেষ অফারের টিকেট এপ্রিল মাসের মধ্যে কিনতে হবে এবং আগামী ১৫ থেকে ৩০ জুনের মধ্যে ভ্রমণ করতে হবে।
তবে বিমানের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, এই অফার শেষ হয়ে গেলেও রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের ভাড়া যেকোনো এয়ারলাইন্সের তুলনায় অনেক কম থাকবে।
প্রায় আড়াই বছর পর সোমবার(৬ এপ্রিল) চালু হতে যাচ্ছে বিমানের অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট। রোববার(৫ এপ্রিল)বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই রুটের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানের আবারও ফ্লাইট চালুর বিরুদ্ধে বেসরকারি এয়ারলাইন্সসমূহ বিরোধীতা করে আসছিল। বিমান যাতে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালু না করে সেই দাবি নিয়ে বেসরকারি এয়ারলাইন্সসমূহবিমান মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের কাছেও গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে অবিচল থাকায় বেসরকারি এয়ারলাইন্সসমূহের অন্যায্য দাবি ধোপে টেকেনি।
বিমান চলাচল খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিমান অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রী পরিবহন শুরু করলে প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য এয়ারলাইন্সসমূহ ভাড়া কমাতে বাধ্য থাকবে। এরই মধ্যে দু’একটি এয়ারলাইন্স ভাড়া কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। এতে করে যাত্রীরা সুলভে আকাশপথে যাতায়াত করতে পারবেন। সেই সঙ্গে বাড়বে সেবার মানও।
বেসরকারি এয়ারলাইন্স এপিক এয়ারের(শিগগিরই যাত্রা শুরু করবে) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আসিফ অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানের যাত্রা স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি নি:সন্দেহে বিমান চলাচল খাতের জন্য ভালো খবর। এতে করে যাত্রীদের সামনে আরো একটি এয়ারলাইন্সে যাত্রার সুযোগ খুলে গেল। ফলে যাত্রীরা ইচ্ছেমতো এয়ারলাইন্স পছন্দ করতে পারবেন।তাদের সামনে আরো বেশি অপশন তৈরি হলো।
অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানের আসার বিরোধীতাকারীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কেউ ব্যবসা করতে নামলে আমার ব্যবসা নষ্ট হয়ে যাবে এটি ঠিক নয়। এটি অযৌক্তিক কথা। যাত্রীদের সেবা দিয়েই এয়ারলাইন্সসমূহকে এই ব্যবসায় টিকে থাকতে হবে। শুধু ভাড়া কমালেই হবে না। দিনশেষে ভাড়ার পাশাপাশি ফ্লাইট সূচি ঠিক রাখা এবং ভালো সার্ভিস দিতে হবে। নতুবা ওই এয়ারলাইন্সের কাছ থেকে যাত্রীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে।
এক সঙ্গে ৫টি অভ্যন্তরীণ রুটে এক সঙ্গে ডানা মেলবে বিমান। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে বেশ ঘটা করেই বিমানের অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইটের উদ্বোধন করা হবে।
ফ্লাইট চালাতে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স ৭৪ আসনের ড্যাশ-৮ কিউ-৪০০ উড়োজাহাজ লিজ নিয়েছে ইজিপ্ট এয়ার থেকে। এরই মধ্যে উড়োজাহাজ দুটি ঢাকা এসে পৌঁছেছে।
সপ্তাহে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ৬টি ফ্লাইট, ঢাকা-যশোরে ৫টি, ঢাকা-রাজশাহীতে তিনটি, ঢাকা-সৈয়দপুর ও ঢাকা-বরিশালে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করবে জাতীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স। এর বাইরে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেটে সপ্তাহে ২৫টি অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনার রয়েছে। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেটে কানেক্টিং ফ্লাইট যথারীতি চালু থাকবে। প্রয়োজন হলে এসব কানেক্টিং ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানো হবে।