এভিয়েশন নিউজ: প্রতি বছর হজ্জ মৌসুম এলেই বাংলাদেশে হজ্জ কেন্দ্রিক কিছু সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। বাংলাদেশ বিমানের নিজস্ব এয়ারক্রাফট দিয়ে আন্তর্জাতিক সময়সূচি রক্ষা করে হজ্জ ফ্লাইট পরিচালনা করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। হজ্জ মৌসুমে এয়ারক্রাফট ভাড়া করে বিমানের সিডিউল রক্ষা করা কঠিন। প্রতি বছর হজ্জ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সরকারের কাছে বেশ কিছু যৌক্তিক দাবী তুলে ধরে এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবার চেষ্টা করে থাকে।
বর্তমান সরকার ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি এয়ারলাইন্স এর সাথে অন্যান্য এয়ারলাইন্সের হজ্জযাত্রী পরিবহনের সুযোগ দিয়েছিলো। এবং সেসময় হজ্জযাত্রীরা বাংলাদেশ থেকে নির্বিঘ্নে হজ্জ পালন করেছিলো। সেসময় অন্যান্য বিদেশী এয়ারলাইন্সের সাথে বাংলাদেশী প্রাইভেট এয়ারলাইন্স ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ও জিএমজি এয়ারলাইন্সকেও হজ্জযাত্রী পরিবহন করার সুযোগ দিয়েছিলো।
বর্তমানে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ (বিডি) লিমিটেড বাংলাদেশে একমাত্র বেসরকারী বিমান সংস্থা যা ঢাকা থেকে সরাসরি জেদ্দা ফ্লাইট পরিচালনা করছে এবং আগামী জুন মাস থেকে স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর এই প্রথম ঢাকা থেকে সরাসরি মদিনা ফ্লাইট শুরু করতে যাচ্ছে। বর্তমানে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বিমানবহরে মোট ১১টি এয়ারক্রাফটের মধ্যে ২টি ২৫০সিটের এয়ারবাস এবং ১৭০সিটের ৫টি এমডি-৮৩ এয়ারক্রাফট রয়েছে। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ তার নিজস্ব ৭টি মাঝারী ও বৃহদাকার এয়ারক্রাফট দিয়ে হজ্জ ফ্লাইট পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ নিজস্ব বিমান বহর দিয়ে অন্যান্য রুটের ফ্লাইট সিডিউল ঠিক রেখে ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে প্রস্তুত।
এবছর বাংলাদেশ থেকে ১,০১,০০০ হজ্জযাত্রী সরকারী ও বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় পবিত্র হজ্জ পালন করার জন্য সৌদিআরব গমন করবে। ঢাকার পাশাপাশি সিলেট ও চট্টগ্রাম থেকেও সরাসরি হজ্জ ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে সরকারের নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে জাতীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, হাব কিংবা আটাব এর পক্ষ থেকে বিমান কিংবা সৌদি এয়ারলাইন্স ছাড়া বাংলাদেশী রেজিস্টার্ড ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকেও অন্যান্য এয়ারলাইন্সের মতো থার্ড ক্যারিয়ার হিসাবে গণ্য করা হয়। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ কখনই থার্ড ক্যারিয়ার হতে পারে না।
বাংলাদেশী রেজিস্টার্ড একটি এয়ারলাইন্সের এয়ারক্রাফট সরাসরি বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব গমন করে থাকে। যখন সৌদি আরব ছাড়া অন্য কোনো দেশের বিমান সংস্থা বাংলাদেশ থেকে হজ্জযাত্রী পরিবহন করে তার নিজ দেশে ভায়া হয়ে সৌদি আরব গমন করে, সেইসব ক্যারিয়ারকে থার্ড ক্যারিয়ার হিসাবে গণ্য করা হয়। উদাহরনস্বরূপ, কাতার এয়ারওয়েজ যদি বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে হজ্জযাত্রী পরিবহন করে তবে কাতার এয়ারওয়েজ সরাসরি সৌদি আরব গমন না করে দোহা হয়ে সৌদি আরব যেতে হবে। ওমান এয়ার বাংলাদেশ থেকে মাস্কাট হয়ে সৌদি আরব গমন করবে। থার্ড ক্যারিয়ার এর ধারনা থেকে কখনই ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ থার্ড ক্যারিয়ার হতে পারে না।
হজ্জ মৌসুমে সৌদি এয়ারলাইন্সের পাশাপাশি সৌদি আরবের বিমান সংস্থা নাস এয়ার হজ্জযাত্রী পরিবহন করে থাকে সেইরূপ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর পাশাপাশি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে হজ্জযাত্রী পরিবহনের সুযোগ দিলে হজ্জ্বের সময় এয়ারক্রাফট সংকট দেখা দেয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। এবং পাশাপাশি থার্ড ক্যারিয়ার এর সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে হজ্জ এজেন্সীগুলো নির্বিঘেœ হজ্জযাত্রী পরিবহন করতে পারবে।