এভিয়েশন নিউজ: অবশেষে সিমিউলেটর ট্রেনিং করতে সুইডেন গেলেন বিমানের নিয়োগকৃত দুই নারী ক্যাডেট পাইলট মুনজারিন রাইয়ান ও সারোয়াত সিরাজ অন্তরা। ক্যাডেট পাইলট হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার ৪ বছর পর তাদের দ্বিতীয় দফায় সিমিউলেটর ট্রেনিংয়ে পাঠানো হল। অপরদিকে নিয়োগ পাওয়া ১০ ক্যাডেট পাইলটের মধ্যে ইন্তেখাব হোসাইন, আবদুল হামিদ মেহেদী ইতোমধ্যে ইতোমধ্যে ট্রেনিং শেষ করে বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহজে ৩ বছর ধরে ফ্লাই করছেন। মুনজারিন ও অন্তরাও বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজের ট্রেনিং পাস করলেও অজ্ঞাত করাণে তাদের দীর্ঘদিন বসিয়ে রাখার পর সম্প্রতি আনা ড্যাস-৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজের এর ট্রেনিং করতে পাঠানো হল। জানাগেছে ট্রেনিং পরীক্ষায় পাস করলে তাদেরকে বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজে না দিয়ে ড্যাস-৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজের ফাস্ট অফিসার হিসাবে নিয়োগ দেয়া হবে। বিমানের ট্রেনিং বিভাগ সুত্রে জানাগেছে মুনজারিন-অন্তরা ছাড়াও আতায়েব জোবায়ের জাফর ও সাদাত জামিলও বর্তমানে সিমিউলেটর ট্রেনিংয়ে সুইডেন অবস্থান করছেন। সব মিলিয়ে প্রথম ব্যাাচের ১০ ক্যাডেট পাইলটের মধ্যে বর্তমানে ২ জন ফ্লাই করছেন আর ৪ জন ট্রেনিংয়ে আছেন। বাকী ৪ জনের ভাগ্যে এখনো কি আছে সেটা কেউ জানে না। এই ৪ ক্যাডেট পাইলট হলেন প্রথম ব্যাচের প্রথম স্থান অধিকার করা নারী ক্যাডেট বৈমানিক অনিতা রহমান, আবু মাসফিক ও নাসিফ রহমান নাফি ও মুনতাসির মাহবুব। বিমানের ডেপুটি চিফ অব ট্রেনিং ক্যাপ্টেন শামীম নজরুল জানান, যারা ট্রেনিংয়ে আছেন তারা পাশ করে ফিরে এলেই বাকীদের পর্যায়ক্রমে টেনিংয়ে পাঠানো হবে। তিনি আরো বলেন, দ্বিতীয় ব্যাচের ওয়েটিং লিস্টে থাকা ১০ জনের ব্যাপারেও পর্যায়ক্রমে নিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ক্যাপ্টেন শামীম নজরুল জানান, বিমান পরিচালণা পর্যদ চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) জামাল উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে বিমানের পুরো পরিচালনা পর্যদ ও সিভিল এভিয়েশন অথরিটি নিয়োগকৃত ২০ ক্যাডেট বৈমানিকের ট্রেনিংয়ের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। জানাগেছে বিমান ২০১০ সালে মোট ২০ জন ক্যাডেট পাইলট নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এদের মধ্যে প্রথম ব্যাচের ১০জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। বাকী ১০ জনকে ওয়েটিং ফর ফারদার ডিসিশিন হিসাবে রাখা হয়। নিয়োগের পরপর সারোয়াত সিরাজ অন্তরা ও আবু হামিদ মেহেদী নামে দুই ক্যাডটে পাইলটকে সিমিউলেটর ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হয়। তবে নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানাগেছে এদের দুজনই ট্রেনিংয়ে উত্তীর্ণ হলেও কৌশলে একমাত্র আবু হামিদ মেহেদীকে পাস দেখিয়ে অন্তরাকে ফেল দেখানো হয়। জানাগেছে ক্যাপ্টেন আদম নামে বিমানের একজন বিতর্কিত পাইলটকে দিয়ে ক্যাডেট পাইলট অন্তরার বিরুদ্ধে মিথ্যা রিপোর্ট করিয়ে তাকে ফেল করার কথা বলে বসিয়ে রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় ব্যাচের ১০ জন হলেন, মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, মহসিন কামাল, অতিশ মোহাম্মদ ইমরান, মন্টি হাসান, রাশিখ বিন মানজুর, আরেফিন সাজিদুর রহমান, সরফরাজ ইয়ামিন, শাহী উদ্দিন আহমেদ ইছাম, মুজাহিদুল ইসলাম ও মনজুরুল ইসলাম। জানা গেছে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্যাডেট পাইলটদের ৬ মাসের ট্রেনিং সম্পন্ন হয়। শুধুমাত্র সিমুলেটর ট্রেনিংসহ দুই মাসের ট্রেনিং হলেই এরা ফার্স্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ পাবেন। সেই অবস্থায় প্রথম ১০ জনের মধ্য থেকে ৪ জনকে সিমুলেটরে পাঠানো হয়। এদের মধ্যে দুইজন ফেল করে। বাকি দুইজন উত্তীর্ণ হয়ে এরই মধ্যে বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজে ফার্স্ট অফিসার হিসেবে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। অভিযোগ আছে, দুইজন ফেল করেছে বাকিরাও ফেল করবে এই অজুহাত দিয়ে বাকিদের গত ৪ বছর সিমুলেটর ট্রেনিংয়ে পাঠানো হয়নি। বিমান সূত্রে জানা গেছে, বসে থাকা ক্যাডেটদের মধ্যে অনেকেরই ৫০০ ঘণ্টার বেশি ফ্লাইং করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আর এদের প্রত্যেকেরই ১৫০ ঘণ্টা ফ্লাই করার অভিজ্ঞতা আছে যা বোয়িং যা বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজে ট্রেনিং করার জন্য উপযুক্ত। আর কম ঘন্টা ফ্লাই করা ক্যাডেটদের বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজে ট্রেনিং করার জন্য বোয়িং কর্তৃক প্রদত্ত সিলেবাস রয়েছে। যদিও এই সিলেবাস অনুযায়ী তাদের ট্রেনিং করা হয়নি। উপরোন্ত তাদের দীর্ঘ দিন বসিয়ে রেখে অবশেষে ড্যাস-৮কিউ ৪০০ উড়োজাহজের ট্রেনিংয়ে পাঠানো হল।
আরও খবর