ঢাকা: শিল্পী খালি গলায় সুর তুলেছেন গ্রাম-বাংলার লোকজ গানের, সেই সুরে গা ভাসিয়েছেন সব বয়সী দর্শক-স্রোতা। মঞ্চে চলেছে নৃত্যসহ বিভিন্ন পরিবেশনা। তাতেই তৃপ্ত ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে বাংলা নতুন বছর-১৪২২ বরণ করতে আসা উৎসবপ্রিয় বাঙালি।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সুর-তালে রবীন্দ্র সরোবরে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের এ সুযোগ করে দেয় কোমলপানীয় প্রতিষ্ঠান কোকা কোলা।
তরুণ শিল্পীদের হৃদয় ছোঁয়া গানে ভোর থেকে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে এ উৎসব।
‘মানুষ ভোজলে সোনার মানুষ হবি’, ‘সোনার পালঙ্কের ঘরে’ ‘তিন পাগলের হলো দেখা নদে এসে…’- এ ধরনের জনপ্রিয় গান দিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের মতোয়ারা করে রাখেন শিল্পীরা। তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গলা মিলিয়েছেন উপস্থিত হাজারও শ্রোতা।
শিল্পী চন্দনা মজুমদারের কণ্ঠে সোনার পালঙ্কের ঘরে, লিখে রেখে ছিলেম যারে… গানটি শুনতেই তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন ষাটোর্ধ্ব আকরাম আলীও।
কথার ছলে আকরাম বলেন, তরুণ বয়সে বন্ধুরা দল বেঁধে ঘুরে বেড়িয়েছি। ধর্মের মতভেদ ভুলে উদযাপন করেছি বিভিন্ন উৎসব। সেই বন্ধুরা এখন আর নেই। তবে এখনো বিভিন্ন উৎসব, বিশেষ করে পহেলা বৈশাখ তরুণ বয়সের মতোই উপভোগের চেষ্টা করি। আমার পুতাছেলে (ছেলের ছেলে) এখন আমার বড় বন্ধু।
অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রবীন্দ্র সরোবরে প্রতি বছরের পহেলা বৈশাখে অনুষ্ঠান হয়। গত চার বছর ধরে নিয়মিত আমি এতে উপস্থিত হই। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ।
মঞ্চে তখন চলছে ‘কোকা কোলা আলোকিত বৈশাখ’ উৎসবের শেষ পরিবেশনা ‘জাগো জাগো… বাংলাদেশ জাগোরে…’ গানের সঙ্গে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের নৃত্য। এ সময় বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হয় কলাবাগানের সাদিয়ার। বান্ধুদের সঙ্গে দলবেঁধে রবীন্দ্র সরোবরে এসেছেন সাদিয়া।
তিনি জানান, বন্ধুরা সারাদিন দলবেঁধে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘোরার পরিকল্পনা করে বাসা থেকে বের হয়েছেন। প্রথমেই এসেছেন রবীন্দ্র সরোবরে। এখান থেকে সংসদ ভবন, রমনা পর্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, টিএসসি হয়ে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরবেন তারা।
অনুষ্ঠান শেষে রবীন্দ্র সরোবরের গেটে কথা হয় আফসানা রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভোরে ঘুরে এসেছি রমনা পার্ক। সেখান থেকেই রবীন্দ্র সরোবরে। শিল্পীদের না চিনলেও তাদের গান খুব ভালো লেগেছে।