বাগেরহাটে বিমান বন্দরের জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু

খুলনায়-বিমান-বন্দর-নির্মাণে-ও-মংলা-খুলনা-রেল-লাইন-স্থাপনে-জটিলতাশুরুটা হয়েছিল সেই ২১ বছর আগে। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ দুই দশক। এত বছরেও খুলনা-বাগেরহাটের মানুষের স্বপ্নের বিমানবন্দর বাস্তবায়িত হয়নি। অবশেষে সেই বাধা কাটতে শুরু করেছে। বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য বাগেরহাট জেলা প্রশাসন জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

১৯৯৬ সালের ২৭ জানুয়ারি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ফয়লা নামক স্থানে বিমানবন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এর পরের বছর শুরু হয় মাটি ভরাটের কাজ। কিন্তু আংশিক মাটি ভরাটের পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ২০০১ সালে বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পে আবারো শুরু হয় মাটি ভরাটের কাজ। এক পর্যায়ে অর্থ বরাদ্দের অভাবে তাও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর খানজাহান আলী বিমানবন্দর প্রকল্পের আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। ২০১১ সালের ৫ মার্চ খুলনার খালিশপুরে শ্রমিক-জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানবন্দর ২০১৮ সালের মধ্যে নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পর ২০১২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তত্কালীন বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী ফারুক খান সাইট পরিদর্শন করেন। তিনি বিমানবন্দর নির্মাণের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নির্দেশ দেন। ২০১৩ সালের এপ্রিলে বিমান মন্ত্রণালয় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) বিশেষজ্ঞদের বিমানবন্দর নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব দেয়। ওই বছরের ২৬ নভেম্বর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে কুয়েট বিশেষজ্ঞরা তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। ওই প্রতিবেদনে বিমানবন্দর নির্মাণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে প্রথম ধাপে ছোট বিমান ওঠা-নামার জন্য ২৫০ কোটি টাকা ও দ্বিতীয় ধাপে পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদানের প্রস্তাব করা হয়। কুয়েট বিশেষজ্ঞদের এ দুটি প্রস্তাবনার বিষয়টি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে অবহিত করে। পরে এ দুটি প্রস্তাবনা একীভূত করে বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্প তৈরি করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিমানবন্দর নির্মাণে ৫৪৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে একটি প্রকল্প তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। ২০১৫ সালের ৫ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। সেসময় বিমানবন্দর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে আরো ১৫০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করে তিন বছরের মধ্যে অর্থাত্ ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার কথা বলা হয়। পরে কর্তৃপক্ষ এক হাজার ৩৭ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব দেয়। ইতোমধ্যে বাগেরহাট জেলা প্রশাসন জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪৪ কোটি টাকা, সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৪৯০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। বাকি ৫৪ কোটি টাকা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেবে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.