ই-টোকেন লাগবে না বাংলাদেশিদের

1791793_0_originalবিদেশি পর্যটক বাড়ানো এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করছে ভারত। বাংলাদেশের জন্য এই প্রক্রিয়া আরও সহজ করছে ভারত। এখন থেকে বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের জন্য কোনো ই-টোকেন লাগবে না। যাওয়ার জন্য বিমান, রেল কিংবা বাসের নিশ্চিত টিকিট থাকলেই ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা এবং ই-টোকেন ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে সরাসরি ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন। গতকাল রোববার ঢাকার ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ঢাকার মিরপুরের ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের (আইভিএসি) পাশাপাশি রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, খুলনা, যশোর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল শাখায় ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন বাংলাদেশিরা।

গত ১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার অনুমোদন দেওয়া হয়। সে সময় ভারত সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, এখন থেকে দীর্ঘমেয়াদে একাধিকবার প্রবেশের (মাল্টিপল এন্ট্রি) সুবিধাযুক্ত ভিসা দেওয়া হবে। পর্যটন, ব্যবসা, চিকিৎসা ও কনফারেন্স ভিসাকে একীভূত করা হবে। এ ছাড়া নতুন করে আরও আটটি দেশে ভারতীয় ই-ট্যুরিস্ট ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মোদি সরকারের এ সিদ্ধান্তের কারণে পর্যটন, ব্যবসা ও চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যারা ভারতে যাবেন, তারা লাভবান হবেন। এর ফলে দেশটির অর্থনীতির চাকাও গতিশীল হবে।

খবরে বলা হয়, সেবা খাতের বাণিজ্য বাড়াতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথম এ ধরনের উদ্যোগ নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে নতুন ভিসা পদ্ধতি অনুমোদন করে দেশটির মন্ত্রিসভা। সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে এ ধরনের ভিসা দেওয়া হবে। তবে এ ধরনের ভিসায় কোনো বিদেশি ভারতে স্থায়িভাবে বাস করতে বা কাজ করতে পারবেন না। এই ভিসার আওতায় কেউ টানা ৬০ দিনের বেশি থাকতে পারবেন না। এ ছাড়া বায়োমেট্রিক তথ্য ও নিরাপত্তাজনিত বাধ্যবাধকতার শর্ত পূরণ করতে হবে।

বর্তমানে সংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি ভারত ভ্রমণ করে থাকেন। এতদিন ভারতভ্রমণে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের ই-টোকেন ফরম পূরণ করে ভিসার আবেদন করতে হতো। যেটি ছিল ভোগান্তির। এ ছাড়া ই-টোকেনকে কেন্দ্র করে এক শ্রেণির দালাল চক্র গড়ে উঠেছিল। তারা ভিসাপ্রার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করত। ফলে ই-টোকেন নিয়ে সব ভিসাপ্রার্থীদের অভিযোগ ছিল। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার ঘোষণা দেন ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। দুদেশের সম্পর্কও অনেক দৃঢ়। বাংলাদেশিদের অনেকেই ভিসার জন্য আবেদন করেন। আমরা ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার চেষ্টা করছি, যাতে বাংলাদেশিরা সহজে ভারত যেতে পারেন। আমরা ৬ মাস, এক বছরের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিসা দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছি। শিক্ষার্থী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যেসব বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের নিশ্চিত ভ্রমণ টিকিট রয়েছে তারা কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই সরাসরি ট্যুরিস্ট ভিসা পাবেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ভ্রমণের তারিখ অবশ্যই আইভিএসিতে ভিসা আবেদনপত্র জমাদানের তারিখের এক মাসের মধ্যে হতে হবে। পরবর্তী বিস্তারিত তথ্য িি.িরাধপনফ.পড়স ঠিকানায় পাওয়া যাবে। এই প্রক্রিয়াটি ভারতের ভিসা প্রাপ্তি প্রক্রিয়া চলমান ও সহজীকরণের একটি ধারাবাহিক প্রচেষ্টা। ২০১৬ সালের অক্টোবরে মহিলা ভ্রমণকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রথম সরাসরি ট্যুরিস্ট ভিসা স্কিম চালু করা হয় এবং পরে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশি ভ্রমণকারীকে এ স্কিমের আওতায় আনা হয়।

এ ব্যাপারে ভারতীয় হাইকমিশনের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ঐতিহাসিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। দুদেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি ও বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ এই সুবিধা চালু করা হয়েছে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.