পাঁচ দেশের নাগরিকদের ভিসা বন্ধ করল কুয়েত

downloadকুয়েত সরকার দেশটিতে পাঁচ দেশের নাগরিকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ পাঁচটি হলো— সিরিয়া, ইরাক, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ইরান। এ নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে এ পাঁচ দেশের উগ্রপন্থী ইসলামী সন্ত্রাসবাদীদের কুয়েতে পর্যটকের ছদ্মবেশে জঙ্গিবাদী তত্পরতা চালানোর আশঙ্কার কথা জানিয়েছে দেশটির সরকার। খবর আল আরাবি, স্পুটনিক ইন্টারন্যাশনাল, এনডিটিভি।

এর আগে শুক্রবার একই যুক্তি দিয়ে সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ বিতর্কিত নির্বাহী আদেশটি যুক্তরাষ্ট্রেই প্রচণ্ড বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়েছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। এ অবস্থায় একই অজুহাতে উল্লিখিত পাঁচটি দেশের নাগরিকদের কোনো ধরনের ভিসার আবেদন না করতে বলেছে কুয়েত সিটি।

কুয়েত সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, ইসলামী সন্ত্রাসবাদীদের দেশটিতে অভিবাসন গ্রহণের ঝুঁকি রয়েছে। এ অবস্থায় উল্লিখিত পাঁচ দেশের নাগরিকদের কোনো ধরনের ভিসার জন্য আবেদন জানানোর প্রয়োজন নেই।

কুয়েতে এর আগে বড় জঙ্গি হামলা হয়েছিল ২০১৫ সালে। ওই সময় দেশটির এক শিয়া মসজিদে বোমা হামলায় ২৭ কুয়েতি শিয়া নিহত হয়। অন্যদিকে ২০১৬ সালে এক্সপ্যাট ইনসাইডার নামে এক সংস্থার প্রতিবেদনে কুয়েতকে প্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে খারাপ দেশগুলোর অন্যতম বলে অভিহিত করা হয়। এতে বলা হয়, কঠোর সাংস্কৃতিক নিয়মকানুনের কারণে দেশটির পরিবেশ প্রবাসীদের জন্য খুব একটা অনুকূলে নয়।

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের আগে একমাত্র মুসলিম দেশ হিসেবে সিরিয়ার নাগরিকদের জন্য অভিবাসন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল কুয়েত। ২০১১ সালে দেশটিতে অবস্থানরত সব সিরিয়ানের ভিসা বাতিল করে দেয় কুয়েত সিটি।

কুয়েতের সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, উল্লিখিত পাঁচটি দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পারস্য উপসাগর তীরবর্তী দেশটি। নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেই এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান এরই মধ্যে নানামুখী জঙ্গি তত্পরতায় বিপর্যস্ত। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ সংঘাতে বিধ্বস্ত সিরিয়া আর ইরাকে বিবদমান বিভিন্ন পক্ষ পারস্পরিক সংঘাত চালিয়ে যাচ্ছে এখনো।

অন্যদিকে ইরানের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ হলেও, নিষিদ্ধ তালিকায় দেশটির অন্তর্ভুক্তির প্রধান কারণ হলো, উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থার (জিসিসি) সঙ্গে তেহরানের দ্বন্দ্ব। জিসিসির এ দ্বন্দ্বে কুয়েতও জড়িয়ে পড়েছে বেশ ভালোভাবেই।

উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালের পর থেকে জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর নিরাপত্তা সুরক্ষাদাতা হয়ে উঠেছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসের এক ব্রিফিং সূত্রে জানা গেছে, ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল (অব.) মাইকেল ফ্লিন বুধবার হোয়াইট হাউজের প্রতিদিনকার ব্রিফিং চলাকালে অনেকটাই অপ্রত্যাশিতভাবে এসে হাজির হন। এ সময় তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এক আনুষ্ঠানিক সতর্কতাবার্তা পাঠিয়েছে। তবে এ সতর্কতাবার্তা নিয়ে বিশদ কোনো তথ্য না দিলেও তিনি জানিয়েছেন, সৌদি জলযানের ওপর হুথি আক্রমণ ও দূরপাল্লার মিসাইল পরীক্ষণের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের ভারসাম্য নষ্ট করছে ইরান।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.