সৌদি আরবের জমজম কূপের পবিত্র পানি পেতে শর্তারোপ করেছে দেশটি। সৌদি
এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের নতুন নিয়ম অনুযায়ী হজ ও ওমরাহ যাত্রীরা দেশে আসার
সময় ৯ রিয়েলে পাঁচ লিটারের বেশি বোতলজাত পানি নিতে পারবেন না। আর এ জন্য
পাসপোর্ট অথবা স্থানীয়দের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদর্শন করতে
হবে।
নতুন নিয়মে পাসপোর্ট-প্রতি এক বোতলে পাঁচ লিটারের বেশি পানি সঙ্গে নেওয়া
যাবে না। এর আগে পাসপোর্ট ছাড়াই ১০ লিটার জমজমের পানি সঙ্গে নেওয়া যেত।
সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মুসলিম
জাহানের মানুষের হৃদয়ে গেঁথে আছে জমজমের পানি। স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে
মুক্তি পেতেও এই পবিত্র পানি পান করেন অনেকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে
প্রতি বছর সৌদিতে পাড়ি জমানো লাখ লাখ মুসলমান হজ ও ওমরাহ শেষে ফিরে আসার
সময় সঙ্গে আনেন এই পানি। সৌদি আরবে অবস্থানরত হাজার হাজার বিদেশিও
হজ-ওমরাহ পালন শেষে পরিবারের জন্য জমজমের পানি সংগ্রহ করেন। কিন্তু এই
পানি সংগ্রহে এখন বাদ সেধেছে পাসপোর্ট কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জমজমের পানি নিতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনেক সময়
দালালদের খপ্পরে পড়তে হয়। অবৈধ পানি বিক্রেতারা এই পানির সঙ্গে অন্য পানি
মিশিয়ে বিক্রি করেন, অতিরিক্ত দামও নেন। দেশটির বিমানবন্দরগুলোতে এই পানি
বিক্রি বন্ধ করতে কিং আবদুল্লাহ প্রকল্পের অধীনে ন্যাশনাল ওয়াটার
কোম্পানি এই ব্যবস্থা চালু করেছে। প্রতিষ্ঠানটি জমজমের প্যাকেটজাত পানি
সরবরাহ ও বন্ধ করার ব্যবস্থা শুরু করেছে।
সৌদি আরবে ওমরাহ পালনকারী হাফিজ আব্দুল রহমানের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি
জানায়, তিনি মক্কা থেকে জমজমের পানি নিতে পারেননি। যেহেতু বিমানবন্দর এটা
নিতে অনুমতি দেবে না। পাসপোর্ট ছাড়া তিনি রিয়াদ থেকে ফিরেছিলেন। আর সে
কারণে পানি নিতে পারেননি।
তবে আগে যেখানে হজ ও ওমরাহ যাত্রীরা ১০ লিটার পানি সঙ্গে আনতে পারতেন,
সেখানে এখন পাঁচ লিটারের অনুমতি ঠিক হয়নি বলেও মনে করেন আব্দুল রহমান।
জেদ্দার বাসিন্দা হাসান আহমেদের বরাত দিয়ে আরব নিউজ জানায়, জমজমের পানি
হিসেবে নকল যে পানি ও বোতল ব্যবহার করা হয়, তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি মক্কা
পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া জমজম পানির একটি
প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি বিমানবন্দর থেকে ন্যাশনাল ওয়াটার
কোম্পানি অনুমোদিত প্যাকেটজাত পানি কেনার সিদ্ধান্ত নেন।
আহমেদ বলেন, আমি বিমানবন্দরে জমজমের পানি কিনতে গিয়ে ভয় পেয়েছিলাম। কারণ
বুথের লোক পাসপোর্ট ছাড়া আমার কাছে পানি বিক্রি করতে অস্বীকৃতি
জানিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমি ভ্রমণকারী নই, তাই আমার কাছে
পাসপোর্ট ছিল না। এমনকি ওই সময় সঙ্গে এনআইডিও ছিল না।
আরও খবর