সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ১৯৭৩ সালে নিয়োগ পাওয়া (বিশেষ সুপিরিয়র সার্ভিস) কর্মকর্তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম ও মেজবাহ উদ্দিন।
সারাদেশে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই চলছে। এরই প্রেক্ষিতে গত বছর ১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। সেই নির্দেশিকার বিষয়ে ১৯৭৩ সালের বিশেষ বিসিএস ব্যাচের মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের পক্ষে ২৬ জন এই রিট আবেদন করেন।
আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এ ব্যাচে ১৩১৪ জন কর্মকর্তা বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ পান। বর্তমানে তারা সবাই অবসরে গেছেন এবং কেউ কেউ মারাও গেছেন।
তিনি আরও বলেন, কারা মুক্তিযোদ্ধা- এ বিষয়ে ২০১০ সালে সরকার একটি সংজ্ঞা নির্ধারণ করে। এ সংজ্ঞায় ১৫ ক্যাটাগরির ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই সংজ্ঞার ৭ নম্বর ক্রমিকে ‘১৯৭৩ সালের বিসিএস কর্মকর্তা’ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত ছিল। কিন্তু সরকার সেই সংজ্ঞা পরিবর্তন করে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে ৯ ক্যাটাগরির ব্যক্তিদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে এতে দুটি শর্ত জুড়ে দেয়া হয়।
এর মধ্যে একটি শর্তে বলা হয়, যে সমস্ত ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের বিভিন্ন ট্রেনিং/প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নাম অন্তর্ভূক্ত করেছেন’ তারাই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন। এ সংজ্ঞার ফলে ৭৩’এর বিসিএস কর্মকর্তাদের কেউ কেউ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন না।
তাই মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নতুন সংজ্ঞা এবং জামুকার যাচাই-বাছাই নির্দেশিকা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয়। এ আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ওই দুটি বিষয়ে রুল জারি করেন এবং রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।