বাংলাদেশ পাটের তিনটি জেনোমেরই স্বীকৃতি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী।
কৃষিক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদেক্ষপ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘পাটের গবেষণায় উৎসাহ দেওয়া হয়েছে এবং এটি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। এর ফলে পাটে যুগান্তকারী সাফল্য উন্মোচিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত এনসিবিআই কর্তৃক বাংলাদেশ পাটের তিনটি জেনোমেরই কোড নম্বর পেয়েছে। এই গবেষণার ফলাফল গত ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ বিশ্বখ্যাত জার্নাল ন্যাচার প্ল্যান্ট এ প্রকাশিত হয়েছে। মিলেছে আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতি।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া এসময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ও গণতন্ত্র পাশাপাশি হাতে হাত রেখে এগিয়ে চলছে। দেশবাসী ও আমরা একাদশ সংসদের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির ভাষণ এমন সময়ে প্রদত্ত হয়েছে যখন বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশাল পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে অস্থির ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আমরা এমন এক সময়ে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপরে আলোচনা করতে দাঁড়িয়েছি যখন উদার বিশ্ব বাণিজ্যকে চ্যালেঞ্জ করে মার্কিন প্রেসিডন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতাসীন হয়েছেন। গ্রেট ব্রিটেন গণভোটের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেছে।’
‘আমরা দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখে এগিয়ে চলেছি। এই মুহূর্তে দেশে শান্তি ও স্থিতি বিরাজ করছে। ২০১৪ সালের অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বিএনপি দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। নির্বাচন পরবর্তী সময়েও বেগম জিয়া ঘোষণা করেছিলেন সরকারকে উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না। আজকের এই স্থিতিশীল শান্ত পরিবেশ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষহাতে সরকার পরিচালনা ও ক্রমাগত সুশাসনের ফল। এই অবস্থান অর্জন করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে এক বিশাল প্রতিকূল অবস্থা পেরিয়ে আসতে হয়েছে। শেখ হসিনার নেতৃত্বে আমরা আলোকিত বাংলাদেশে বাস করছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যার শাসনামলে জাতীয় গ্রিডে নুতনভাবে যুক্ত হয়েছে ৮ হাজার দুইশত ৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।’
সরকারের দুই মেয়াদে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার কাজে বিশ্বাস করে। যে কোন লোক বিদেশ থেকে দেশে ফিরে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি দেখে অবাক বিস্ময়ে থাকিয়ে থাকে।’
পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক অর্থ দিতে অস্বীকার করে। এই ব্যাপারে কলকাঠি নাড়েন ড. মুহাম্মদ ইউনুস। সেই অবস্থায় এটা অনেকেই ভাবেন বিশ্বব্যাংকের সহায়তা ছাড়া পদ্মা সেতু করা সম্ভব হবে না। কিন্তু অবিচল ছিলেন আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এই স্বপ্নের সেতু আমরা নিজদের টাকাতেই করবো। একথা আজ সফল হতে চলেছে। পদ্মা সেতুর প্রায় ৪০ভাগ কাজ শেষ। নির্ধারিত সময়ে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হবে এবং ২০১৮ সালের মধ্যে এই স্বপ্নের সেতু বাস্তবে রূপ নেবে। এতে আমাদের জিডিপিতে প্রবৃদ্ধির হার কমপক্ষে ১ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।’
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘গণতন্ত্র, শান্তি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথ ধরে আমরা হাঁটছি সেই পথ ধরেই বাংলাদেশ আরো বহুদূর এগিয়ে যাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। বিশ্ব সভায় উন্নত দেশ হিসেবে আপন মহিমায় অধিষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।’
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় আরো অংশ গ্রহণ করেন বিএম মোজাম্মেল হক, নাজমুল হক প্রধান, বেগম আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভুঁইয়া, বেগম আয়েশা ফেরদাউস।