রাস্তা বন্ধ ও যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে প্রচারণায় অংশ না নিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রাজধানীর গুলিস্তানে অবস্থিত দক্ষিণ সিটির রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে বেলা ১১টার দিকে বিশেষ প্রতিনিধি মারফত চিঠিটি খালেদা জিয়ার কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে স্বাক্ষর করেন রিটার্নিং অফিসার মিহির সারওয়ার মোর্শেদ। একই ধরনের চিঠি উত্তর সিটির রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে পাঠানোর কথা রয়েছে।
বিএনপি সমর্থিত দক্ষিণ সিটির মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাস ও উত্তর সিটির মেয়র তাবিথ আউয়ালের পক্ষে শুক্রবার ষষ্ট দিনের মতো প্রচারণায় অংশ নেয় বেগম খালেদা জিয়া। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় বলে ইসিতে অভিযোগ করা হয়।
এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে খালেরদা জিয়া যেন যানচলাচেলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে প্রচারণা না চালাতে পারেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় ইসি। এ বিষয়ে জরুরীভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়ে কমিশন সচিবালয়কে জানাতেও বলা হয়েছে। চিঠির অনুলিপি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও নির্বাচনে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিতে করেছে।
রিটার্নিং অফিসারদের কাছে পাঠনো চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গাড়িবহর নিয়ে দলের সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নিয়োজিত থাকায় জন-চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। পাশাপাশি তার গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে কিছু ব্যক্তি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে ১৮ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা-২০১০ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
চিঠিতে আচরণবিধির ৬ ধারার প্রচারণা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ, সভা-সমিতি-অনুষ্ঠানে বিধিনিষেধ, মিছিল বা শোডাউনে বিধিনিষেধ, উস্কানিমূলক বক্তব্য ও অনভিপ্রেত গোলযোগ সৃষ্টির বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ সব কাজ বিধিমালা পরিপন্থী এবং বিধি ৯ মোতাবেক তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
আচরণবিধিগুলো বেগম খালেদা জিয়ার নজরে এনে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিতে রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ মোতাবেক জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়ে কমিশন সচিবালয়কে অবহিত করতেও বলা হয়।
আচরণবিধির ৯ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ব্যক্তি বিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, সর্বোচ্চ ৬ মাসের দণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘কেউ যেন রাস্তা বন্ধ করে প্রচারণা চালাতে না পারেন সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দুই সিটির রিটার্নিং অফিসার, ডিএমপি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশনা পাঠানো হচ্ছে।’
নির্বাচনী আচরণবিধি পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দেয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত সহস্র নাগরিক কমিটি।
ওই অভিযোগের পরই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা- এ ধরনের প্রশ্নের জবাবে ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘সহস্র নাগরিক কমিটির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আগে থেকেই এর প্রক্রিয়া চলছিল।’