নিউইয়র্কে কাঁচামরিচের পাউন্ড ১৮ ডলার, পানে স্বস্তি

Pepar-Bনিউইয়র্ক প্রতিনিধি : নিউইয়র্কে পানের বাজারে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে কাঁচামরিচের বাজারে। শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) নিউইয়র্কে বাঙালী অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ব্রুকলিনের চার্চ ম্যাকডোনাল্ডস, ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার-ক্যাসেল হিল এলাকার বাংলাদেশী মালিকানার কয়েকটি গ্রোসারি দোকান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

গত মার্চের শেষ সপ্তাহে ১ পাউন্ড কাঁচামরিচের দাম ছিল ৩ ডলার। বর্তমানে তা গিয়ে ঠেকেছে ১২ থেকে ১৮ ডলারে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে কাঁচামরিচের বিকল্প হিসেবে হ্যালাপিনো ও গ্রিন পেপারে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের।

হঠাৎ করে কাঁচামরিচের দাম বাড়ায় ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় যে যার ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছেন। আর বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা থাকার পরও আমদানি কম হওয়ায় কাঁচামরিচের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তবে গ্রীষ্মের শুরুতে আমদানি বেড়ে যাওয়ায় পানের বাজারে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

এ বিষয়ে জ্যাকসন হাইটসের ফুডকোর্ট গ্রোসারির কর্ণধার আবুল খায়ের বলেন, ‘আমাদের দোকানে আগে কাঁচামরিচের স্তূপ থাকত। বর্তমানে আমদানি কম হওয়ায় বাড়তি দামে কিনে আনছি। তাই একেক দিন একেক রকম দাম নিতে হচ্ছে ক্রেতাদের কাছ থেকে। আমরা বাংলাদেশী গ্রোসারি প্রতিষ্ঠান করেছি প্রবাসীদের কাছে দেশীয় পণ্য সরবরাহ করতে। কিন্তু কাঁচামরিচ সঙ্কট আমাদের অনেকটা প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে।’

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সবগুলো বাংলাদেশী গ্রোসারিতে একই চিত্র। কয়েকজন প্রবাসী দ্য রিপোর্টের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘দেখুন, আমরা এখানে বসবাস করলেও দেশীয় সব পণ্যই পাচ্ছি। কিন্তু হঠাৎ করে কাঁচামরিচের দাম শুনে মাথায় হাত। ১ পাউন্ড মরিচ যদি কিনতে হয় ১৫-২০ ডলারে, এটা মানা যায় বলুন? যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় দেড় হাজার।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশী ব্যবসায়ী মালিকদের সংগঠন ‘জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এ্যাসোসিয়েশন জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম বলেন, আসলে কাঁচামরিচ সঙ্কট আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। চাহিদা অনুযায়ী সবচেয়ে বেশী কাঁচামরিচ আসত ডোমিনিকান রিপাবলিক থেকে। কিন্তু আমদানি করা কাঁচামরিচের সঙ্গে এক ধরনের বিষাক্ত পোকা (বাগস) পাওয়া গেছে। তাই ভাইরাস আশঙ্কায় সেখান থেকে আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অব এ্যাগ্রিকালচার ইউএসডিএর ‘ফুড সেফটি এ্যান্ড ইন্সপেকশন সার্ভিস’। আর এতেই এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘কমপক্ষে ৪ মাস সময় লাগবে এই সঙ্কট কাটতে। কারণ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ডোমিনিকান ব্যবসায়ীদের কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে। সেগুলো পূরণ হলে চার মাস পর এই সমস্যা কেটে যাবে।’

অপরদিকে মরিচের বাজারে অস্থিরতা থাকলেও পানের আমদানি বেড়েছে। এর ফলে স্বস্তি নেমে এসেছে কমিউনিটির পান পিয়াসীদের মাঝে। পাউন্ডপ্রতি পানের দাম স্বাভাবিক সময়ে ছিল ১০ ডলার, যেখানে শীতের সময়ে ৩৫-৪০ ডলারেও গিয়ে ঠেকেছিল। সেই পান এখন ২০ ডলারে নেমে এসেছে।

এ বিষয়ে ব্যবসায়ী আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম বলেন, আসলে পান সঙ্কট দীর্ঘদিনের। মূলত এখানে পান এসে থাকে আমেরিকারই একটি রাজ্য হাওয়াই থেকে। চাষীর সংখ্যা কমে যাওয়া এবং বৈরী আবহাওয়ার (তুষারপাতের) প্রভাবে পান উৎপাদন কমে গেছে। এ ছাড়া শীতের সময়ে পানের ফলনও কম হয়। তবে এখন পানের বাজারে স্বস্তি নেমে এসেছে। বর্তমানে ১ পাউন্ড পান ২০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে দাম আরও কমবে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.