নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ২৯ নং নোয়াগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজে রডের বদলে বাঁশের ব্যবহার নিয়ে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি স্কুল ভবনের ঢালাই ও প্লাস্টার খসে বাঁশের অংশবিশেষ বের হলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। বাঁশের পাশাপাশি স্কুল ভবনের ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া ভবনের মেঝেও দেবে গেছে।
আতঙ্ক আর ঝুঁকি নিয়ে ওই ভবনেই চলছে প্রায় দুই শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থীর পাঠদান। এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর মধ্যে। যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে ভবনটি।
জানা যায়, লোহার বদলে বাঁশ ব্যবহার করা স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০৬ সালে। ২০০৩ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বিদ্যালয়ের পুনর্নির্মাণ কাজ করা হয়। ছাপা ও নাজির নামের দুই ব্যক্তি ঠিকাদার ছিলেন বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়। ভবন নির্মাণের সময় রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করেছেন তারা। এছাড়াও বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনটি ভাঙার পর সেটির ইট, রড, টিন সবকিছুই টেণ্ডার ছাড়াই বিক্রি করা হয়। যার কোনো সঠিক হিসেব আজও পাওয়া যায়নি বলে জানান এলাকাবাসী।
গতকাল রবিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ফাটল ও বাঁশ বের হয়ে যাওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীরা ভয়ে আসতে চাচ্ছে না স্কুলে। বিষয়টি তদন্ত করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান, ঠিকাদার, প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কাজের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন অভিভাবক, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সচেতন মহল।
বিদ্যালয়ের এই বেহাল দশা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক কাজী রবিউল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনটির ছাদে ফাটল, মেঝে দেবে যাওয়া ও ভবনের পিলারসহ কয়েক স্থানে বাঁশ বের হওয়ার ঘটনাটি সত্য। তবে এতে ভয়ের কিছু নেই। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ফাটলের স্থানগুলো সংস্কার করে ক্লাস পরিচালনা করা হচ্ছে। বেশ আগে থেকেই ছাদ দিয়ে পানি পড়তো, সেটিও সংস্কার করা হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি এ.এস.এম সালেকিন বলেন, তদন্ত করে বিষয়টির সুরাহা হওয়া উচিত।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) লোহাগড়া উপজেলা প্রকৌশলী ওসমান গনির নিকট ভবন নির্মাণের দাপ্তরিক ফাইল, প্রকৌশলী ও ঠিকাদার কে ছিলেন— জানতে চাইলে তিনি তথ্য না দিয়ে টালবাহানা করে কৌশলে এড়িয়ে যান।