এভিয়েশন নিউজ: শিডিউল থাকার পর মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট না আসায় শনিবার রাতে শতাধিক যাত্রী হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকা পড়েন।
তাদের বেশিরভাগ মালয়েশিয়া হয়ে অস্ট্রেলিয়া, লন্ডন ও নিউইয়র্ক যাবার কথা ছিল। দীর্ঘ সময় ফ্লাইট না পেয়ে এক পর্যায়ে যাত্রীরা বিমান বন্দরে হৈচৈ শুরু করেন।
এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ফ্লাইট না ছাড়ার বিষয়ে যাত্রীদের কোন সদুত্তর দিতে না পারায় বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা এয়ারলাইন্সের কাউন্টার ভাংচুর ও কর্মচারীদের মারধর করেন। এক পর্যায়ে যাত্রীদের শান্ত করতে কর্তৃপক্ষ ৩৫ জন যাত্রীকে উত্তরার একটি হোটেলে নিয়ে যান।
এতে যাত্রীরা আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। জাহাঙ্গীর নামে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার এক যাত্রী জানান, তাকে তার স্বপরিবারসহ ওই হোটেলে রাখা হয়েছে। কিন্তু হোটেলটি এতটাই নিন্মমানের ও অস্বাস্থ্যকর সেখানে থাকার কোন পরিবেশ ছিল না।
রুম ও বাথরুমগুলো নোংরা স্যাসস্যাতে। মশা-মাছি ভনভন করছে। রাতে বাসি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে তাদের ফুড পয়েজনিং হয়ে গেছে। তিনি বলেন, লাখ লাখ টাকা খরচ করে টিকিট ক্রয় করলেও তাদেরকে শ্রমিকদের মতো হোটেলে রাখা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপর এক যাত্রী জানান, উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত হোটেলটিতে অসামাজিক কর্মকাণ্ড ও জুয়ার আড্ডা বসে। এখানে কোন ভদ্রলোকের থাকার পরিবেশ নেই।
তিনি বলেন, তিনি শুনেছেন মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের সঙ্গে এই হোটেলের যাত্রী রাখার কোন চুক্তি পর্যন্ত নেই। কিন্তু মোটা অংকের টাকা খেয়ে আন্ডারহ্যান্ড ডিলিংয়ের মাধ্যমে এয়ারলাইন্সের একটি সিন্ডিকেট যাত্রীদের সঙ্গে এধরনের প্রতারণা করেছে।
রাতে ১০/১২জন যাত্রী হোটেল ছেড়ে থানায় গিয়ে মামলা করতে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের সন্ত্রাসীদের দিয়ে হুমকি পর্যন্ত দেয়া হয়েছে বলে এক যাত্রী অভিযোগ করেন।
মহিম নামে এক যাত্রী জানান, তারা যে দামে টিকিট ক্রয় করেছেন, নিয়ম অনুযায়ী তাদের থ্রি স্টার হোটেলে রাখার কথা। কিন্তু তাদেরকে উত্তরাস্থ ৯ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত প্লাটিনাম নামে গরুর খোয়ারের মতো রুম সম্বলিত একটি হোটেলে রাখা হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে ওই হোটেলে ৪ বার বিদ্যুৎ চলে গেলেও নিজস্ব জেনারেটর ছিল না। এতে যাত্রীরা গরমে নানা দুর্ভোগে পড়েন। হোটেল জুড়ে মশার অত্যাচারে রাতে অনেকে ঘুম পর্যন্ত যেতে পারেননি। শ্রমিক শ্রেণীর যাত্রীর একটি কক্ষে ৩/৪জনকে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যদিও নিয়ম অনুযায়ী একজন যাত্রীকে একটি রুম দেয়ার। এই বিষয়ে রাতে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এয়ারপোর্ট ইনচার্জ সৈয়দা নূরানি রিমি জানান, কি কারণে মালয়েশিয়া থেকে ফ্লাইট আসেনি তা তিনি জানেন না।
ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় যাত্রীদের উত্তরাস্থ প্লাটিনাম নামের একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, যাদের বুকিং কনফার্ম তাদের রাতে যাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাকীদের সকালে পাঠানো হবে।
হোটেল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগেও যাত্রীদের এই হোটেলে রাখা হয়েছে। তখন কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। প্লাটিনাম নামের ওই হোটেলের সঙ্গে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের চুক্তি আছে।