ফ্লাইট শিডিউল বিপর্যয় চলছে রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে। এমনকি যাত্রী কম হলে বাতিল করা হচ্ছে নিয়মিত ফ্লাইটও। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা। এ ভোগান্তি মার্চজুড়েই থাকবে বলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বহরের ১২টি উড়োজাহাজের মধ্যে তিনটিই গ্রাউন্ডেড থাকায় এমন শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে বিমান। দুটি উড়োজাহাজ ইঞ্জিনের ত্রুটির কারণে এবং আরেকটি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অংশ হিসেবে গ্রাউন্ডেড রয়েছে। পাশাপাশি ভিভিআইপি ফ্লাইটের কারণেও নিয়মিত শিডিউল থেকে সরানো হয়েছে একটি উড়োজাহাজ। এ অবস্থায় বিমানকে শিডিউল পরিবর্তনের পাশাপাশি বাতিল করতে হচ্ছে নিয়মিত ফ্লাইট।
এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, উড়োজাহাজ সংকটের কারণে ফ্লাইট শিডিউল বিপর্যয় হলেও ধীরে ধীরে তা কাটিয়ে উঠছে বিমান। আশা করা যাচ্ছে, ৮ মার্চের মধ্যে ৫০ শতাংশ ফ্লাইট শিডিউল বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। দাম্মাম বিমানবন্দরে ক্ষতিগ্রস্ত উড়োজাহাজটি উড্ডয়ন উপযোগী হলে ১২ মার্চের মধ্যে ৭৫ শতাংশ শিডিউল ঠিক হয়ে যাবে। আর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অংশ হিসেবে ডি-চেকে পাঠানো বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ইআর উড়োজাহাজটি বহরে যুক্ত হলে ৩০ মার্চের পর ফ্লাইট শিডিউল বিপর্যয় শতভাগ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। যাত্রীদের মোবাইল ফোনে মেসেজ দিয়ে পরিবর্তিত ফ্লাইটের সময় জানিয়ে দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়া থেকে ভাড়া নেয়া বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ইআর উড়োজাহাজ নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অংশ হিসেবে ডি-চেকের জন্য দেশটিতে পাঠানো হয়েছে। বিমানের প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, ৩০ মার্চ ডি-চেক শেষে যাত্রী পরিবহন করতে বহরে ফিরবে উড়োজাহাজটি। আর মিসরের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়া নেয়া বিমানের বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর উড়োজাহাজে দেখা দিয়েছে ইঞ্জিনের সমস্যা। ইঞ্জিন মেরামত করে উড়োজাহাজটি সচল হতে আরো সময় প্রয়োজন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দাম্মাম যায় বিমানের নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৮০০ ইআর উড়োজাহাজ। দাম্মাম বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটির ইঞ্জিনে পাখি প্রবেশ করে। উড়োজাহাজটির বহরে ফিরতে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
এদিকে গতকাল সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ভিভিআইপি ফ্লাইটে তিনদিনের সফরে ইন্দোনেশিয়া গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানা গেছে, একটি উড়োজাহাজ ভিভিআইপি ফ্লাইটে ব্যবহার হলেও স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্ল্যান অব ভিভিআইপি ফ্লাইট (এসওপি অব ভিভিআইপি ফ্লাইট) অনুসারে ফ্লাইটের জন্য আরো একটি উড়োজাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়। ফ্লাইটের একদিন আগে থেকেই উড়োজাহাজগুলোর এসওপি অনুযায়ী সার্ভিসিং, চেকিংসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ভিভিআইপি ফ্লাইটের জন্য অতিরিক্ত উড়োজাহাজ না থাকায় নিয়মিত ফ্লাইট থেকে উড়োজাহাজ ব্যবহার হওয়ায় চাপ পড়ে শিডিউলে। ফিরতি ফ্লাইটেও একই প্রক্রিয়ায় এসওপি অনুসরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, বিমানের বহরে রয়েছে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ইআর, দুটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ। শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে ফ্লাইট শিডিউল নতুন করে বিন্যাস করা হচ্ছে। কম যাত্রী থাকলে বাতিল করা হচ্ছে ফ্লাইট।
সূত্রঃবণিক বার্তা