গ্রিসের স্পিকারের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

1489210123গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন শুক্রবার গ্রিসের জাতীয় সংসদের স্পিকার নিকোলাস ভুতসিসের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। গ্রিসের সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক বিশেষ করে আন্তঃসংসদ সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ সম্ভাবনা বিষয়ে স্পিকারকে অবহিত করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের অল্পদিনের মধ্যেই ১৯৭২ সালের ১১ মার্চ গ্রিস বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। আগামীকাল ১১ মার্চ বাংলাদেশ-গ্রিস কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৫তম বার্ষিকী। এই উপলক্ষে রাষ্ট্রদূত স্পীকারকে অভিনন্দন জানান।

গ্রীস গণতন্ত্রের সূতিকাগার এবং বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। দুটি গণতান্ত্রিক দেশের সংসদের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত স্পিকারের প্রতি আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, গত ২০১৫ সালে গ্রীসের সংসদে গ্রিস-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ গঠিত হয়েছে এবং ২০১৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ-গ্রিস পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ গঠিত হয়েছে। দু’দেশের জাতীয় সংসদে দুটি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ গঠিত হওয়াকে রাষ্ট্রদূত আন্তঃসংসদ সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি দু’দেশের সংসদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

গত ২৩ অক্টোবর ২০১৬ ঢাকায় অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠকের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত দু’দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। এই প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত আগামী ১-৫ এপ্রিল ২০১৭ ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য আন্তঃসংসদ ইউনিয়ন (Inter-Parliamentary Union)-এর ১৩৬তম সভায় গ্রিসের প্রতিনিধি দলকে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানান।

গ্রিসের স্পিকার দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে দু’দেশের সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান। দু’দেশের সংসদে গঠিত ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ আন্তঃসংসদ সম্পর্কোন্নয়নে নিবিড়ভাবে কাজ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে উচ্চ পর্যায়ে সফরের মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরো গতি লাভ করবে। স্পিকার ভুতসিস দক্ষিণ ইউরোপ এবং বলকান অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আরো বলেন যে, গ্রিসে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা বাংলাদেশ এবং গ্রিস দু’দেশের অর্থনীতিতেই অবদান রাখছেন। তিনি প্রবাসীদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে গ্রিক সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। স্পিকার রাষ্ট্রদূতকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি গ্রিস সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি বলেন, গ্রীস মানবাধিকার ও শ্রমিক অধিকারের প্রতি সর্বদা শ্রদ্ধাশীল। বাংলাদেশিদের প্রতি তিনি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।

বৈঠকে গ্রিস-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের সভাপতি আন্দ্রেও রিজুলিস, গ্রিসের সংসদের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব সুজন দেবনাথ উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.