জোবায়ের আহম্মেদ অভি: বাগেরহাটের রামপালে বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগামী তিন বছরের মধ্যে এর কাজ শেষ হবে। এর নাম হবে খানজাহান আলী বিমানবন্দর। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪৫ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে আগামী জুলাই থেকে। ২০১৮ সালের জুন নাগাদ এর কাজ শেষ হবে। এ সংক্রান্ত প্রকল্প শিগগিরই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি বা একনেকের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়ছে। এ এলাকায় মংলা বন্দর, মংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল, মংলা ইপিজেড এবং রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। এর বাইরে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দক্ষিণাঞ্চলে ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাগেরহাটের রামপালে পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর নির্মিত হবে। দেশে যে পরিমাণ চিংড়ি উৎপাদন ও রফতানি হয় তার ৬০ শতাংশ খুলনার। রফতানিমুখী চিংড়ি শিল্পের বিকাশে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রয়োজন। আকাশ পরিবহন সেবা চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হবে। খুলনা ও মংলা বন্দর থেকে এটির দূরত্ব ২০ কিলোমিটার।
পরিকল্পনা বিভাগের সদস্য মোহাম্মদ সফিকুল আজম বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি দ্রুত অনুমোদনের চেষ্টা চলছে। আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য একনেক সভায় এ প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে।
১৯৯৬ সালে বাগেরহাটে খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণের প্রাথমিক উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর আওতায় ৪১ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ এবং ভূমি উন্নয়নের কথা থাকলেও সেটি শেষ করা হয়নি। ২০১১ সালে খুলনা জেলা সফরকালে খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ৪৬৪ কোটি টাকা ব্যয় সংবলিত একটি প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায়। তবে নানা জটিলতায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়নি পরিকল্পনা কমিশন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় প্রকল্পটি দ্রুত অনমোদনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পর প্রকল্পটি অনুমোদনে সম্ভব্যতা যাচাই শেষে এর ব্যয় ধরা হয় ৫৪৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। প্রকল্পে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ দেওয়া হবে ৪৯০ কোটি টাকা। আর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) দেবে ৫৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
সম্প্রতি পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, দেশের উত্তরাঞ্চলকে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে অর্থনীতিকে বেগবান করতে চায় সরকার। এজন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বাস্তবায়নে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাগেরহাটে একটি পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর নির্মাণ করা হবে। বেবিচক প্রকল্প প্রস্তাবে বলেছে, বর্তমানে খুলনাতে কোনো বিমানবন্দর নেই। খুলনা থেকে যশোর বিমানবন্দরের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার, সড়কপথে যা দুই ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে।
আরও খবর