স্কুল পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিংয়ে উৎসাহিত করতে গত ৯ মার্চ থেকে সারা দেশে শুরু হয়েছে জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। দেশের ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য তৃতীয়বারের মতো আয়োজন করা হয়েছে ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা-২০১৭। এবার ১৬টি আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার পাশাপাশি ৩টি উপজেলায়ও এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
গত ৯ মার্চ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যশোর অঞ্চলের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এই আয়োজনের পর্দা উঠেছে। সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে। এছাড়া ইতোমধ্যে খুলনা ও রাজশাহী অঞ্চলে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি অঞ্চলগুলোতে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণে এটি এখন উৎসবে রূপ নিয়েছে।
এই আয়োজন সম্পর্কে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমাদের আয়োজনে এবার প্রচারণামূলক অ্যাক্টিভেশন, মেন্টরস ট্রেনিং, অনলাইন মেন্টরশিপ ও ফোরাম, ১৬টি আঞ্চলিক প্রোগ্রামিং ও কুইজ প্রতিযোগিতা, ৩টি উপজেলা পর্যায়ে প্রোগ্রামিং ও কুইজ প্রতিযোগিতা, ৪টি অনলাইন প্র্যাকটিস কনটেস্ট, সারাদেশে স্থাপিত ২ হাজার ১টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবে অনলাইন কনটেস্ট, জাতীয় প্রোগ্রামিং ও কুইজ প্রতিযোগিতা, জাতীয় প্রোগামিং ক্যাম্প, বাংলাদেশ ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড ও আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড (আইওআই) ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আইওআই ক্যাম্প থেকে নির্বাচিত ৪ শিক্ষার্থী এ বছর ইরানের তেহরানে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডে অংশ নেবে।
পলক আরও বলেন, স্কুল শিক্ষার্থীদের মাঝে ছোটবেলা থেকেই প্রোগ্রামিং সম্পর্কে সচেতন করে তোলা ও বিশ্বমানের প্রোগ্রামার তৈরি করা এ আয়োজনের মুখ্য উদ্দেশ্য। ইতোমধ্যে আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও আমাদের এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে।
প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে কুইজ প্রতিযোগিতা। প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা চলাকালীন সময়ে কুইজে অংশগ্রহণকারীরা দেশের সেরা প্রোগ্রামার ও শিক্ষকদের কাছ থেকে নিজেদের নানান প্রশ্নের উত্তর জেনে নিতে পারছে। এ ছাড়া প্রত্যেক আঞ্চলিক উৎসবে স্থানীয় শিক্ষকদের জন্য কর্মশালারও ব্যবস্থা রয়েছে।
এছাড়া মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যাশনাল গার্লস প্রোগ্রামিং কনটেস্ট এবং শিশুদের জন্য জাতীয় শিশু কোডিং উৎসব হচ্ছে এবার।
কুইজ প্রতিযোগিতার ৩টি ক্যাটাগরি হলো জুনিয়র (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি), সেকেন্ডারি (নবম-এসএসসি পরীক্ষার্থী) এবং হায়ার সেকেন্ডারি (একাদশ-এইচএসসি পরিক্ষার্থী, পলিটেকনিকের চতুর্থ সেমিস্টার পর্যন্ত। আর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুটি ক্যাটাগরিতে। একটি হলো জুনিয়র (ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি)। অপরটি হলো সিনিয়র (দশম থেকে দ্বাদশ ও সমমানের শিক্ষার্থী পলিটেকনিকের চতুর্থ সেমিস্টার পর্যন্ত)।
প্রতিযোগিতার বিচার কাজের জন্য দেশে তৈরি আন্তর্জাতিক জাজ ইঞ্জিন কোডমার্শাল ব্যবহার করা হচ্ছে। www.nhspc.org নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। সক্রিয় আছে প্রতিযোগিতার ফেসবুক পেজ এবং ফেসবুক গ্রুপ।
উল্লেখ্য, দেশে দক্ষ কম্পিউটার প্রোগ্রামার তৈরিতে ছোটবেলা থেকেই শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে গত ২০১৫ সাল থেকে সারা দেশে এই আয়োজন করে আসছে সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) এই প্রতিযোগিতার বাস্তবায়ন সহযোগী এবং কোড মার্শাল জাজিং প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ স্থানীয় আয়োজক হিসেবে কাজ করছে।