পর্যটন কেন্দ্রগুলো ফের সরগরম

untitled-33_134604কক্সবাজার অফিস
উপচেপড়া ভিড় না হলেও পর্যটননগরী কক্সবাজারসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে দেখা মিলেছে পর্যটকের। বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর গত শুক্রবার থেকে আজ রোববার তিন দিনের সরকারি ছুটি হাতছাড়া করেননি অনেকেই। পরিবার-পরিবজন নিয়ে ছুটেছেন জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। প্রধান পর্যটনকেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন হোটেল ছিল অগ্রিম বুকিং।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী সব এয়ারলাইন যাত্রীদের চাহিদামতো টিকিট সরবরাহ করতে পারেনি। বিভিন্ন ট্যুর অপারেটর, হোটেল কর্তৃপক্ষ ও এয়ারলাইন কোম্পানিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে পর্যটক আগমনের এমন চিত্র পাওয়া গেছে। পর্যটক আগমনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে এবার পর্যটন মৌসুমের ক্ষতি সামান্য হলেও পুষিয়ে নেওয়া যাবে বলে আশা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
শুক্র ও শনিবার নিয়মিত সরকারি ছুটি এবং আজ রোববার বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে সরকারি ছুটি ছিল। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মতে গত তিন দিনে কক্সবাজারে অর্ধলক্ষ পর্যটকের আগমন ঘটেছে। দীর্ঘদিন পর কক্সবাজার সৈকত পর্যটকদের পদচারণায় মূখর হয়ে উঠেছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া অর্ধশত হোটেল মোটেল ও রেস্টুরেন্ট খুলেছে ইতিমধ্যে। কক্সবাজার হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি ওমর সোলতান জানিয়েছেন, রাজনৈতিক সহিংসতা, টানা অবরোধ-হরতালের কারণে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে কক্সবাজারে পর্যটন শিল্পে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। পর্যটন খাতে প্রতিদিন শতকোটি টাকা লোকসান গোনেন ব্যবসায়ীরা।
এখন বিরোধী দলের আন্দোলন কর্মসূচি না থাকায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার থেকে দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শুক্রবার থেকে সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলও ফের শুরু হয়েছে।
পর্যটন মোটেল লাবনীর ম্যানেজার রাশেদ খান জানান, গত তিন মাসের মধ্যে এই প্রথম ৫০টি কক্ষ ভাড়া দিতে পেরেছি। এই তিন দিনে দেড় শতাধিক অতিথি তাদের হোটেলে উঠেছেন।
তারকা মানের হোটেল ওশান প্যারাডাইসের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাইদ আলমগীর জানান, তাদের হোটেলের প্রায় অর্ধেক সংখ্যক কক্ষ ভাড়া হয়েছে। আরও কয়েকটি করপোরেট বুকিং রয়েছে।
হোটেল সি গালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল ইসলাম চৌধুরী রুমি জানান, ‘দুটি পর্যটন মৌসুমে কোনো ব্যবসা হয়নি। একান্ত বাধ্য হয়ে হোটেলের অর্ধেক কর্মচারী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছি। এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে কক্সবাজারে পর্যটন ব্যবসা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে আশা করছি।’

কক্সবাজার শহরের বার্মিজ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি অং চিং বলেন ‘টানা হরতাল অবরোধে পর্যটক না থাকায় ব্যবসায়ীদের চরম দুর্দিন গেছে। এই তিন দিনের ছুটিতে কিছু পর্যটকের দেখা পাওয়ায় ব্যবসায়ীরা আশার আলো দেখছেন।
গতকাল শনিবার কক্সবাজার সৈকতের লাবণী ও সুগন্ধা পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায় কয়েক হাজার পর্যটক আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতেছে। দীর্ঘ মন্দা সময় পার করে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য।
তিন দিনের ছুটিতে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র বান্দরবানেও পর্যটকদের আনাগোনা দেখা গেছে। দি গাইড টুরস লিমিটেডের মালিকানাধীন বান্দরবানের ‘হিলসাইট রিসোর্ট’ গত তিন দিন সম্পূর্ণ বুকিং করা ছিল তাদের রিসোর্ট। রিসোর্টের ব্যবস্থাপক রয়েল বোম জানান, ‘১ থেকে ৩ মে ফুল বুক। এরপর ৪ থেকে ৫ মে খালি থাকলেও ৬ ও ৮ মে তাদের রিসোর্টের অনেক কক্ষ অগ্রিম বুকিং করা আছে।’
এদিকে বর্ষা মৌসুম শুরু হলেও পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হকন্যা কুয়াকাটায়। এখানে কুয়াকাটার আশপাশের অঞ্চলের পর্যটকই বেশি আসছেন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.