চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন: পদের চেয়ে জনবল বেশি!

Shah-Amanat-Airportএভিয়েশন নিউজ: চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে অনুমোদিত পদের দ্বিগুণের বেশি কর্মরতদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একই সঙ্গে ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে যাত্রী হয়রানি বেড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। থানা পুলিশের চেয়ে ইমিগ্রেশনে আয়-রোজগার বেশি বলেই এখানে পোস্টিং পেতে চেষ্টা-তদবিরও বেশি। যাত্রী হয়রানি, সোনা এবং ব্যাগেজ চোরাচালানিদের সঙ্গে আঁতাতসহ নানা খাতে অবৈধ আয়ের পরিমাণ বেশি হওয়ায় এখানে জনবল বেশি হওয়ার মূল কারণ বলে জানা গেছে। সিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, বিমানবন্দরে কাজ বেড়েছে। ২৪ ঘণ্টা ইমিগ্রেশনে সেবা দিতে প্রয়োজনীয় জনবল দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে মহানগর পুলিশে জনবল সংকটের কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। সিএমপিতে সম্প্রতি আরও দ্বিগুণ জনবল বাড়ানোর প্রস্তাব পুলিশ সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে। নগরীর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থানা, গোয়েন্দা শাখা ও পুলিশ ক্যাম্পগুলোতে মঞ্জুরিকৃত পদের জনবল কম রয়েছে। জনবল সংকটে নগরীর আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

সিএমপি সূত্র জানায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে মঞ্জুরিকৃত জনবল রয়েছে ৫ হাজার ৭৮৫ জন। নগরীতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি তথা থানার সংখ্যা বাড়ানোর কারণে এতে সংকট দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি সিএমপিতে আরও ৫ হাজার ১৫৫টি পদ বৃদ্ধির জন্য সিএমপি পুলিশ কমিশনার একটি প্রস্তাব পুলিশ সদর দফতরে পাঠিয়েছেন। বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে ২৪ ঘণ্টা সেবা অব্যাহত রাখতে বর্তমান মঞ্জুরিকৃত জনবলের সঙ্গে আরও ৪৩টি পদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়।

ইমিগ্রেশন শাখা সূত্রে জানা গেছে, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মঞ্জুরিকৃত জনবল ৩৫, বর্তমানে কর্মরত রয়েছে ৭৭ জন। কর্মরতদের মধ্যে রয়েছে ১ জন অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার, ১ জন সহকারী পুলিশ কমিশনার। এছাড়া মঞ্জুরিকৃত ৩ জন পরিদর্শক পদের বিপরীতে এখন রয়েছেন ৫, ২২ জন এসআই পদের বিপরীতে রয়েছেন ২৭, ৩ জন এএসআই পদের বিপরীতে রয়েছেন ১৩, ৫ জন কনস্টেবল পদের বিপরীতে রয়েছেন ২৯ জন। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এরমধ্যে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার, সহকারী পুলিশ কমিশনার, পরিদর্শক ও এসআই পদে বদলি হয় সিএমপি কমিশনারের নির্দেশে এবং এএসআই ও কনস্টেবল পদে বদলির বিষয়টি তদারকি করেন উপপুলিশ কমিশনার (সদর)।

বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে কর্মরত ৫ পরিদর্শক (ওসি) হচ্ছেন- জাহাঙ্গীর আলম, প্রদীপ কুমার দাশ, ওমর ফারুক, আবদুর রাজ্জাক ও এইচএম ইকবাল। বিমানবন্দরে পরিদর্শক বেশি থাকার কারণে দৈনিক তিন শিফটে ২ জন করে ওসি কাজ করছেন। বাসায় অলস সময় কাটান অপর ৪ ওসি। তারা দুদিন পর পর ইমিগ্রেশন বিভাগে কাজ করার সুযোগ পান। এ বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার কামরুজ্জামান জানান, ওসিরা এখানে পালা বদল করে শিফটিং ডিউটি করেন। ইমিগ্রেশন ওসিদের প্রশিক্ষণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার জানামতে অধিকাংশের প্রশিক্ষণ রয়েছে। আর না থাকলেও তাদের কাজের অভিজ্ঞতা আছে।

জানা গেছে, সিএমপি পুলিশের পছন্দের প্রথম কর্মস্থল বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন শাখা। এখানে বদলি হতে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা তথা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে চলে ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ। অভিযোগ রয়েছে, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, এমপিসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সন্তুষ্ট করতে পারলেই বদলি মেলে ইমিগ্রেশন শাখায়। কয়েকজন প্রবাসী জানিয়েছেন, অবৈধ অর্থ আদায়ের লোভে বিদেশে যাওয়া-আসার সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ নানাভাবে হয়রানি করে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.