বিটিসিএল এমডির বিরুদ্ধে ৪৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

BTCL-640বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহফুজ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বিটিসিএলের একজন গ্রাহকের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তা তদন্ত করে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার নথিপত্রও এরই মধ্যে দুদকে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।

বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন মাহফুজ উদ্দিন আহমেদ। রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতে সহযোগিতার অভিযোগে গত ১৮ মার্চ নেত্রকোনা বিশেষ জজ আদালতে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। বিটিসিএলের এক গ্রাহক মামলাটি করেন। মামলার নথিতে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (এসএস) পদে ছিলেন মাহফুজ উদ্দিন আহমেদ। ওই সময় তিনি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক টেলিফোন কলের রাজস্ব আত্মসাৎ করেন।

জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব এবং বিটিসিএলের চেয়ারম্যান ফয়জুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘মামলা দায়েরের বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তে কাজ করছে দুদক। অভিযোগ প্রমাণ হলে পরবর্তীতে করণীয় নির্ধারণ করা হবে। আপাতত তার দায়িত্ব পালনে আইনি কোনো বাধা নেই।’

মামলার নথিতে বলা হয়েছে, বিটিসিএলের প্রধান কার্যালয়ের ২০০৭-০৮ থেকে ২০১২-১৩ পর্যন্ত বৈদেশিক কলের ওপর বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক নিরীক্ষা পরিচালনা করে ডাক, টেলিযোগাযোগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক নিরীক্ষা অধিদফতর। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক কল রেকর্ড মুছে ফেলার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। তখন আর্থিক সুবিধা নিয়ে এ অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের রক্ষা করেন বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত এমডি।

এছাড়া মাহফুজ উদ্দিন আহমেদ এমডির দায়িত্ব পালনকালে উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান জাইকার অর্থায়নে টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের জন্য ৩৬০ কোটি টাকার প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যন্ত্রপাতি স্থাপন না করলেও অবৈধভাবে ৯০ কোটি টাকা পরিশোধের জন্য পাঁচ মাসে পাঁচবার পিএ কমিটি পরিবর্তন করা হয়েছে। পাশাপাশি ভুয়া রেকর্ডপত্রের মাধ্যমে ৬০টি বৈদেশিক ক্যারিয়ারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করতে সহযোগিতা করেন তিনি। এসব ক্যারিয়ার সরকারের ৯০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে চলে গেছে।

মামলার নথিতে আরো বলা হয়েছে, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর দুটি বেসরকারি টেলিফোন সংস্থার বিরুদ্ধে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনা ধরা পড়ে। প্রতিষ্ঠান দুটিকে ১ হাজার কোটি টাকা জরিমানার বিধান থাকলেও বিটিসিএলের এমডির যোগসাজশে মাত্র ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিটিসিএলের এমডি পাঁচটি গাড়ি একাই ব্যবহার করছেন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.