যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে

imagesusaযুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। চলতি বছরের প্রথম দুই মাস শেষে দেশটিতে পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল ২ দশমিক ৮২ শতাংশ। তৃতীয় মাসে এসে সেটি বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার হিস্যায় তৃতীয় অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছে বাংলাদেশ।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে বড় এ বাজারটিতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়ে আসছিল। চলতি বছরের দ্বিতীয় মাসে সেটি ইতিবাচক ধারায় ফেরে। বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রে ১৩৯ কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। এ আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর দেশটিতে রপ্তানি কমতে থাকে। ভবন ধসের পর যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান শেয়ারড বিল্ডিংয়ে কাজ দেওয়া বন্ধ করে দেয়। পরে ক্রেতাদের দুই জোটের কারখানা পরিদর্শন ইতিবাচক ফলাফলে পরিস্থিতি উন্নতি হতে থাকে। অবশ্য বছরের শুরুতে রাজনৈতিক অস্থিরতায় রপ্তানি কমার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নেতারা।
জানতে চাইলে বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের শেষ দিকের পাওয়া ক্রয়াদেশের রপ্তানি পরিসংখ্যান এটি। রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় ক্রয়াদেশ কিছুটা কমে যায়। এ সময়ের হিসাব সামনের মাসগুলোতে পাওয়া যাবে।’ তবে সব মিলে বাংলাদেশের এ অর্জন খুবই ইতিবাচক বলে মনে করেন তিনি। বলেন, ‘কারখানা কর্মপরিবেশ উন্নয়নে আমরা অনেক কাজ করেছি। এতে ক্রেতাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। এটি তারই ফল।’
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্স অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) গত মঙ্গলবার এ হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। অটেক্সা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক, বস্ত্র ও পাদুকার আমদানির তথ্য অর্থ ও পরিমাণ (বর্গমিটার)—এ দুই হিসাবই নিয়মিত প্রকাশ করে।
এদিকে আলোচ্য সময়ে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই অবশ্য বিভিন্ন দেশ থেকে পোশাক কেনা কমিয়েছে। বছরের প্রথম তিন মাসে ১ হাজার ২৭৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে দেশটি। এটি গত বছরের একই সময়ের ১ হাজার ৩০৯ কোটি ডলারের চেয়ে ২ দশমিক ৬২ শতাংশ কম। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধি খুবই ইতিবাচক বলেই দেখছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জনের বিচারে ভিয়েতনাম ও ভারতের কাছে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। তার মানে তাদের রপ্তানি বাংলাদেশের চেয়ে বেশি হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে ভিয়েতনাম ২৪৩ কোটি ও ভারত ১০৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি ১২ দশমিক ১১, আর ভারতের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির শীর্ষস্থান বা ৩৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ চীনের দখলেই আছে। বছরের প্রথম তিন মাসে দেশটি ৬৪৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ। চতুর্থ ইন্দোনেশিয়া। তারা রপ্তানি করেছে ১২৬ কোটি ডলারের পোশাক। পঞ্চম থেকে সপ্তম অবস্থানে আছে যথাক্রমে ভারত, মেক্সিকো ও কম্বোডিয়া। শেষ দুই দেশের রপ্তানির পরিমাণ ৮৬ ও ৬০ কোটি ডলার।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.