এভিয়েশন নিউজ: চলতি বছরে বাংলাদেশ থেকে ২ হাজার ৭০০ শ্রমিক নেবে কোরিয়া সরকার। ইতোমধ্যে কোরিয়ায় বৈধ উপায়ে গত ৭ বছরে বাংলাদেশ থেকে ১০ হাজার শ্রমিক গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশে কোরিয়া দূতাবাসের ইপিএস সেন্টার বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কর্মী নিয়োগের পদ্ধতি এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের (ইপিএস) মাধ্যমে গত বছর সর্বোচ্চ এক হাজার ৮০০ কর্মী কোরিয়া গেছে।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে ইপিএস সেন্টার বাংলাদেশের পরিচালক লি মিন হুয়া। তিনি জানান, ইপিএস পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর দুই হাজার শ্রমিক নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর সরকারের। চলতি বছর দুই হাজার ৭০০ শ্রমিক নেওয়া কর্মসূচি রয়েছে তাদের। প্রতিবছর দুই হাজার নেওয়ার কথা থাকলে ২০১০ সালে নেওয়া বন্ধ ছিল। ২০১১ সালে গেছে খুবই কম। আর ২০১২ সালে গেছে এক হাজার। তবে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ২০০৭ সালে কর্মী নিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি শ্রমিক কোরিয়া গেছে গত বছর।
ইপিএস পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, বিদেশি শ্রমিকদের মানবাধিকার সমুন্নত এবং নায্য সুবিধাদি পাওয়া যায় বলে অনেক বাংলাদেশি কোরিয়ায় যেতে চায়। এই প্রক্রিয়ায় বিমানভাড়া ছাড়া কোনো বাড়তি পয়সা খরচ হয় না। তবে একজন কর্মী চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হলেই চাকরির নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। তাই কম টাকায় কোরিয়ায় চাকরিতে যেতে পারে শ্রমিকরা। একজন শ্রমিককে সর্বোচ্চ ৮০০ মাকিন ডলার বা ৬২ হাজার ৪০০ টাকা খরচ করতে হয়।
লি মিন হুয়া বলেন, এ পদ্ধতিতে বিদেশি শ্রমিকরা কোরিয়ার শ্রম আইন অনুসারে মজুরি পেয়ে থাকে। সেই অনুসারে একজন শ্রমিক এক ঘণ্টা কাজ করলে ন্যূনতম পাঁচ ডলার করে প্রতি মাসে ২০৯ ঘণ্টা হিসাবে এক হাজার ৪৫ ডলার পান বা প্রায় ৮২ হাজার টাকা (৭৮ টাকা ধরে)। এ ছাড়া অতিরিক্ত কাজ বা ছুটির দিনে কাজ করলে প্রায় ২০০০ ডলার পর্যন্ত বেতন পায় কর্মীরা।
অবৈধ হওয়ার কারণে কতজন বাংলাদেশি শ্রমিক বর্তমানে কোরিয়ার জেলে রয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাব দিতে না পারলেও মোট শ্রমিকের ৩ শতাংশ শিল্প দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ থেকে কম কর্মী নিয়োগ করা হয় কেন- এমন এক প্রশ্নের জবাবে লি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিক ঘন ঘন কাজ পরিবর্তন করে বলে কোরিয়ার শিল্প মালিকরা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে চান না। এ ছাড়া মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও থেকে যায় বলে তারা অবৈধ হয়ে পড়ে। কোরিয়া সরকার অবৈধ অভিবাসী একেবারেই পছন্দ করে না। অবৈধ অভিবাসী প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, অবৈধ অভিবাসীর কারণে গত দেড় বছরে ভিয়েতনাম থেকে কোনো শ্রমিক নেয়নি কোরিয়া।