লক্ষ্মীপুরে গালাগাল করায় নারীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে পূর্বশত্রুতার জের ধরে রানী বেগম (৩৪) নামে এক স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের একটি সুপারি বাগানে ওই নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ভূঁইয়া ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. মিন্টুর নির্দেশে এ নির্যাতন করা হয়। বুধবার সকালে রানী বেগমকে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের ঠাকুর বাড়ির মোহাম্মদ উল্যার স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে রানীকে গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করে একই বাড়ির শিরীন আক্তার এবং তার মেয়ে সুমি আক্তার। তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে রানী প্রাণে রক্ষা পান। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করলে ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টুর লোকজনের ভয়ে সম্ভব হয়নি। পরে বুধবার সকালে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশেই রানীকে মারধর করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
অভিযুক্ত সুমি আক্তার বলেন, রানী বাড়ির সবাইকে গালগাল করে আসছে। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। তিনি রানীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার জন্য বলেন। এ কারণেই বাড়ির সবাই মিলে তাকে বেঁধে রেখেছি।
দক্ষিন চন্ডিপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মিন্টু বলেন, সভাপতি হিসেবে বাড়ি ও এলাকার সুবিধা-অসুবিধা দেখার দায়িত্ব আমার রয়েছে। রানী নামে ওই নারী পাগল। দিনরাত শুধু মানুষকে গালাগাল করে। ঠাকুর বাড়ির সম্মানের কথা চিন্তা করে একটু শাসন করা হয়েছে। এতে দোষের কিছু হয়নি।
জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তবে বেঁধে রেখে মারধরের কথা তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে কেউ তার কাছে অভিযোগ করেনি। ঘটনার সত্যতা জানতে তিনি ওই বাড়িতে যাবেন।
এ ব্যাপারে রামগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তোতা মিয়া বলেন, বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।