এভিয়েশন নিউজ: প্রবাসে নিহত বাংলাদেশি কর্মীদের মৃত্যুজনিত তিপূরণ মামলার ৭৫ শতাংশেরই নিষ্পত্তি হয়নি। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড, বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসসূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, ২০১২ সালে প্রবাসী কর্মীদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর হার ৬ শতাংশ হলেও গত বছর তা বৃদ্ধি পেয়ে ২৯ দশমিক ৫৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, যাদের শ্রমের বিনিময়ে অর্জিত টাকায় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে, তারা বিদেশের মাটিতে বিপদে পড়লে বা তাদের মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় ও অনিরাপদ কর্মপরিবেশ কর্মীদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর অন্যতম কারণ। সরকার এটা কমাতে চেষ্টা করছে। কর্মীদের অনুকূল কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার দায়িত্বও সরকারের। দায়িত্বশীল হতে হবে তাদেরও, যারা বিদেশে লোক পাঠায়। কিন্তু আমাদের কাছে অনেক অভিযোগ আসে যে খোদ দূতাবাসের লোকজন শ্রমিক ভাইদের নিগৃহীত করেন। এটা কখনও কাম্য হতে পারে না।
সূত্রমতে, নিষ্পত্তি হয়নি এমন মামলার সংখ্যা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতেই বেশি। সৌদি আরবেই বাংলাদেশি কর্মীদের বেশি অপমৃত্যু ঘটেছে। গত সাড়ে ৫ বছরে মোট মৃত্যুবরণকারী ৭ হাজার ৬৮০ জনের মধ্যে ২ হাজার ৪৩৫ কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। যদিও দেশে আনা হয়েছে ৩ হাজার ৮৮৩টি মৃতদেহ।
সূত্র জানায়, কর্মক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্ঘটনায় মারা গেছেন সর্বোচ্চসংখ্যক কর্মী। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা, আগুনে পুড়ে, খুন ও আত্মহত্যায় মারা গেছেন প্রবাসীরা। এসব কারণ ছাড়াও নিয়ম ভেঙে আকামা পরিবর্তন, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও থেকে যাওয়া- ইত্যাদি কারণে মামলা হয়েছে। কিন্তু মামলা পরিচালনায় বাদি ও দূতাবাসের উদাসীনতাসহ নানা কারণে এসব মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড সূত্র জানায়, গত সাড়ে ৫ বছরে কর্মরত অবস্থায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ৫ হাজার ২২৩ শ্রমিকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যুজনিত তিপূরণ চেয়ে ১ হাজার ৩৭৪টি মামলা হয়েছে। নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ৩৮৯টির। ৯৮৫টি এখনও অমীমাংসিত।
