ঢাকা : দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ১ হাজার ৩১৪ ডলার। বাংলাদেশের বর্তমান বিনিময় হারের হিসাবে যা ১ লাখ ২৪ হাজার ৯২ টাকা।
গত অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ১৯০ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১২৪ ডলার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ সভায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) চূড়ান্ত অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ১৯০ ডলার। প্রকৃত মূল্যের ভিত্তিতে পৃথিবীতে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৫৮তম। অপরদিকে ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে দেশের মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ১৯ মার্কিন ডলার। এর ফলে নিম্ন মধ্যআয়ের দেশে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। তবে দেশটির উচ্চ মধ্যবিত্তের কাতারে পৌঁছাতে আরও সময় প্রয়োজন।’
মূলত ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জিত হওয়ার কারণেই মাথাপিছু আয় ব্যাপকভাবে বেড়েছে বলে দাবি করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
জাতিসংঘের হিসাবে মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ- দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘সংস্থাটি তিনটি ক্ষেত্রে অগ্রগতি দেখে। এর মধ্যে অর্থনীতির এগিয়ে যাওয়া, মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকের অগ্রগতি ও মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে মাথাপিছু আয় বাড়ার বিষয়টি। এর প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালো করছে।’
২০০৪-০৫ ভিত্তিবছর ধরে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সাময়িকভাবে এই হিসাব করেছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৫৪ ডলার। সম্প্রতি ভিত্তিবছর পরিবর্তন করার ফলে মাথাপিছু আয় হাজার ডলার পেরিয়ে যায়। মাথাপিছু আয়ের হিসাবে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের পাঠানো প্রবাসী আয়ও যোগ হয়। তবে মাথাপিছু আয় প্রত্যেক বাংলাদেশির আলাদা বা ব্যক্তিগত আয় নয়। এটি সামগ্রিক আয়, যা মাথাপিছু ভাগ করে দেওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ক্রমশ বাড়লেও সম্পদের সুষম বণ্টন হচ্ছে না। তাই আয়বৈষম্য থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল ও উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের আয় অনেক কম। আবার শহরের চেয়ে গ্রামে মজুরির তফাত রয়েছে। আবার উন্নয়ন প্রকল্পের সুফলও দরিদ্র মানুষ পাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী, লুক্সেমবার্গে মানুষের মাথাপিছু আয় সবচেয়ে বেশি। তাদের মাথাপিছু আয় ১ লাখ ১০ হাজার ৪২৩ ডলার। তবে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। সার্ক অঞ্চলে শ্রীলঙ্কার মাথাপিছু আয় সবচেয়ে বেশি, ৩ হাজার ১৬১ ডলার। আর মাথাপিছু আয় ভারতে ১ হাজার ৫০৪ ডলার ও পাকিস্তানে ১ হাজার ৩০৭ ডলার।