বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য নতুন করে জমি খুঁজতে নিপ্পন কোয়েইকে নির্দেশ।
মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে হচ্ছে না বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ঘনবসতি ও খাসজমি সংকটের বিষয়টি বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ দুটি স্থানের পরিবর্তে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোয়েইকে ঢাকার আশপাশে জমি খোঁজার নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাপানি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোয়েইকে নতুন জমি নির্বাচন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার আশপাশে এ প্রকল্পের জন্য জমি নির্বাচন করবে। ঢাকার পাশে আগে যেসব স্থান খোঁজা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে এবং নতুন স্থান নির্বাচন করে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) শিগগিরই বৈঠক করে সম্ভাব্য স্থানের তালিকা করবে।
এ প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে অনেক দিক বিবেচনায় রাখতে হয়। সার্বিক বিবেচনায় মাদারীপুর বা শরীয়তপুরের বদলে ঢাকার আশপাশে বিমানবন্দরের জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে। খাসজমি সংকট ও ঘনবসতিতে হাজার হাজার মানুষ ও তাদের বাড়িঘর উচ্ছেদকে বাধা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে।
জানা গেছে, নিপ্পন কোয়েই লিমিটেড ২০১৫ সালের জুলাই থেকে জাজিরা ও শিবচর প্রকল্পের বিস্তারিত সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু করে। আগামী জুনের মধ্যে ১৩৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সব কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই সম্প্রতি জাপানি এ প্রতিষ্ঠান প্রতিবেদন জমা দেয়। এ পর্যন্ত প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ১২০ কোটি টাকা। নিপ্পন কোয়েইয়ের দেয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি তাদের নতুন জায়গা বের করতে নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্প মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন দেয়াকালে প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছিল ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা। চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এটি নির্মাণ করতে আগ্রহ দেখায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রাথমিক নকশা অনুযায়ী এটি তৈরি করা হবে প্রায় ৬ হাজার একর জমি নিয়ে। নতুন বিমানবন্দরে নয় হাজার ফুট করে মোট তিনটি রানওয়ে থাকবে। আধুনিক জাম্বো বিমান তথা এয়ারবাস ৩৮০ চলাচলে সক্ষম রানওয়ে দুটি এবং অবতরণের জন্য অন্য একটি রানওয়ে। এছাড়া সমান্তরাল ট্যাক্সিওয়ে ও অ্যাপ্রোন, তিন লাখ যাত্রী পরিবহনের সুবিধাসম্পন্ন প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল কমপ্লেক্স, পর্যাপ্ত স্থানবিশিষ্ট ডিউটি ফ্রি শপ, পাঁচ তারকাবিশিষ্ট হোটেল এবং তিন তারকাবিশিষ্ট ট্রানজিট হোটেল, পর্যাপ্ত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার, আধুনিক এবং সমন্বিত নিরাপত্তা সিস্টেম ও টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক থাকবে এ বিমান বন্দরে। এছাড়া বিমানবন্দরের কাছাকাছি একটি স্যাটেলাইট সিটি তৈরিরও পরিকল্পনা রয়েছে।