২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বেনাপোল কাস্টমস ৫১ কোটি ৬ লাখ টাকা কম রাজস্ব আহরণ করেছে। ১০ মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য ছিল ২ হাজার ৮৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। সেখানে আহরণ হয়েছে ২ হাজার ৩৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
জানা গেছে, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নানা ধরনের হয়রানির ফলে সম্প্রতি বেনাপোল দিয়ে আমদানি কমতে শুরু করেছে। প্রয়োজন ছাড়া অনেক পণ্যের রাসায়নিক পরীক্ষা, দীর্ঘদিন ফাইল আটকে রাখা, অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানাবিধ হয়রানির কারণে আমদানিকারকরা এ বন্দর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, এপ্রিলে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আহরণ হয়েছে ২৪৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। মার্চে ২৫৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণের পরিমাণ ২৩২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে ২১৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৮৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা এবং জানুয়ারিতে ১৯৭ কোটি ২১ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ১৭২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, লাগাতার অবরোধ আর দফায় দফায় হরতালের পাশাপাশি কতিপয় কাস্টমস কর্মকর্তার অহেতুক হয়রানির কারণে বেনাপোলে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতেও রাজস্ব আহরণ চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। হয়রানি বন্ধ, বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি দীর্ঘদিনের দাবিকৃত ক্লিয়ারিং হাউজ চালু হলে রাজস্ব আহরণ কয়েক গুণ বাড়বে।
তিনি আরো বলেন, অপ্রয়োজনীভাবে পণ্যের রাসায়নিক পরীক্ষা ও আমদানিকৃত পণ্যের ওপর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত লোড না চাপালে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি পাবে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আইন বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান জানান, এ বন্দর দিয়ে কাঁচা ফলমূল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ, বেনাপোল স্থলবন্দরের নানা বিড়ম্বনা, অনৈতিক সুযোগ গ্রহণ, যন্ত্রপাতির সমস্যা, চুরি রোধসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ালে আমদানি-রফতানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে বাড়বে রাজস্ব আহরণের পরিমাণও।
এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টম হাউজের কমিশনার এএফএম আবদুল্লাহ খান জানান, বিভিন্ন আপিলের নিষ্পত্তি ও বকেয়া ব্যাংক গ্যারান্টি আদায় করা হচ্ছে। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।