পাচার করা নারীদের দেহব্যবসায় বাধ্য করা হচ্ছে

dahoবাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে পাচার করা নারীদের থাইল্যান্ডে যৌনকাজে বাধ্য করছে অপরাধীরা। থাইল্যান্ডের পুলিশ দেশটির শংখলা প্রদেশের হাত ইয়াই থেকে এ রকম কয়েকজন হতভাগ্য নারীকে উদ্ধার করেছে। ওই সব নারীদের পাচারকারীরা থাইল্যান্ডের পর্যটন শহর চিয়াং মাই থেকে শংখলা প্রদেশে নিয়ে যায়। এসব অপরাধের সাথে জড়িত তিনজন দুর্বৃত্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, যেসব নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদেরকে উচ্চ বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে তাদের মা-বাবার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের নাগরিক ছাড়াও স্থানীয় কিছু নারী রয়েছেন। মূলত চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তাদেরকে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে তাদের জায়গা হয় হাত ইয়াই এর বিভিন্ন পতিতালয়ে।

থাইল্যান্ড পুলিশ ব্যুরোর কমিশনার লে. জেনারেল তানাটিসাক থিরসাওয়াত গতকাল চিয়াং মাইতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে নারী ও শিশু পাচারের বিস্তারিত বর্ণনা দেন। তিনি জানান, স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। এই অভিযানে হতভাগ্য নারী ও শিশুদের উদ্ধার করা ছাড়াও বেশ কয়েকজন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সদস্যরা খাবার ও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, থাইল্যান্ডের নাগরিক আমপাই চাচানা এবং চাইউট কিজতংপুং হাত ইয়াইতে একটি নাইট ক্লাব চালান। সেখানে তারা নারীদের নাচতে বাধ্য করেন। এ ছাড়া পর্যটন এলাকা পুকেতেও তাদের একটি নাইট ক্লাব রয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, থাইল্যান্ডে দেহব্যবসা আইনসম্মত। একসময় সেখানকার সমাজ বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও সামাজিক অবস্থার বিবর্তনের কারণে অনেকে এখন এই পেশায় আসতে চান না। পর্যটন শহরগুলোতে পর্যটকদের চাহিদা বিবেচনায় সেখানকার যৌন ব্যবসায়ীরা এখন মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর দিকে হাত বাড়িয়েছে। দালালরা মূলত বিভিন্ন বাসা এবং হোটেলে কাজ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে অসহায় পরিবারের নারীদের থাইল্যান্ডে পাচার করে। পরে তাদের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করলে ওই অসহায় নারীদের স্থান হয় পতিতালয়ে। উল্লেখ্য, সমপ্রতি থাইল্যান্ডের বিভিন্ন জঙ্গল থেকে অভিবাসন প্রত্যাশীদের গণকবর আবিষ্কৃত হয়েছে। ওই হতভাগ্যদেরও কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ না পাওয়ায় তাদেরকে হত্যা করে পাচারকারীরা।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.