এক দশক আগেও মানুষ কোনো বিষয়ে টানা ১২ সেকেন্ড মনোযোগ ধরে রাখতে পারত। কিন্তু ডিজিটাল প্রযুক্তির উত্থানের কারণে মানুষের মনোযোগের ব্যাপ্তি কমে নেমে এসেছে আট সেকেন্ডে। সম্প্রতি বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট করপোরেশন এই গবেষণা করেছে।
মানুষের মনোযোগের ব্যাপ্তিকাল এখন গোল্ডফিশের চেয়েও কম। গোল্ডফিশের গড় মনোযোগব্যাপ্তি নয় সেকেন্ড।
মানুষের জীবনে প্রযুক্তির প্রভাব কতখানি এবং বর্তমানের ডিজিটাল জীবনযাপনে মনোযোগের ব্যাপ্তি কতটা কমেছে তা জানতে ৫৪ পৃষ্ঠার গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে মাইক্রোসফট। গবেষকেরা কানাডার ১৮ বছরের ওপরে প্রায় দুই হাজার মানুষের তথ্য এই গবেষণায় ব্যবহার করেছেন।
জরিপে অংশ নেওয়ার ব্যক্তিরা গেম খেলার পাশাপাশি অনলাইনে যোগাযোগ করে গবেষকেদের দৈনন্দিন জীবনে স্মার্টফোন ও অন্যান্য ডিজিটাল মিডিয়ার প্রভাব বুঝতে সাহায্য করেন। এ সময় তাঁদের মস্তিষ্কের কার্যক্রম ও আচরণের চিত্রগ্রহণ করা হয়। গবেষকেরা গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মনোযোগের স্তর ও বিভিন্ন স্ক্রিন, টাস্ক, কনটেন্টের ভিন্নতায় কার্যক্রমের বিষয়গুলো পরিমাপ করেন। গবেষণায় দেখা যায় ২০০০ সালে যেখানে মানুষের মনোযোগের ব্যাপ্তি ছিল গড়ে ১২ সেকেন্ড সেখানে তা কমে ৮ সেকেন্ডে নেমে এসেছে।
গবেষণায় সব বয়স, লিঙ্গ ও গ্রুপের মানুষের মনোযোগ কমে যাওয়ার বিষয়টি দেখা গেছে। যাঁদের বয়স ১৮ থেকে ৩৪ এর মধ্যে তাঁরা ৩৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সীদের তুলনায় ৩১ শতাংশ বেশি মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন।
এদিকে নারীর তুলনায় পুরুষের মনোযোগ থাকে বেশি। পুরুষের মনোযোগ ৩৩ শতাংশ ও নারীর ৩১ শতাংশ। যখন যন্ত্র ব্যবহার করে তখন তরুণেরা আসক্তদের মতো আচরণ করে।
১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি স্বীকার করেছেন যে প্রতি ৩০ মিনিট বা তার চেয়েও কম সময় পরপর মোবাইল ফোন পরীক্ষা করেন। এ ছাড়া টিভি দেখার সময় এক চতুর্থাংশই তাদের বহনযোগ্য যন্ত্রটি সঙ্গে রাখেন।
অবশ্য, এই গবেষণায় ইতিবাচক যে বিষয় হিসেবে মানুষের মাল্টিটাস্কিং বা একাধিক কাজ করার সক্ষমতা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি উন্নত হয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছেন।