মধু মাস জৈষ্ঠের কয়েক দিন পার হয়েছে। এই মাসের শুরু থেকেই চারদিক মৌসুমী ফলের সুগন্ধে শুভাসিত আকাশ-বাতাস। আম, লিচু, কাচাসোনা রং কাঁঠালের প্রাচুর্য্য পাহাড়ী জীবনের প্রাণমনকে ভাসিয়ে নিয়ে চলছে। শুরু থেকেই পাহাড়ী হাট-বাজারে হরেক রকম ফলের সমাহার হলেও দামটা যেন আকাশ ছোঁয়া।
নৌসর্গিক শোভা মন্ডিত শহর খাগড়াছড়িতে এবার মৌসুমী ফলের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষিবিদদের ধারণা আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে অন্যান্য বছরের তুলনায় ফলন আরো বেশী হতো। তবে সম্প্রতি সময়ে ঘূর্ণিঝড় ও শীলা বৃষ্টির পাশাপাশি বৈরি আবহাওয়া ও অনাবৃষ্টির কারণে কৃষকদের আশানুরুপ ফলন না হওয়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
মৌসুমী ফলের প্রাণকেন্দ্র জেলার গুইমারা ও মাটিরাঙ্গার হাট-বাজারগুলোতে চাষীরা ব্যবসায়ীদের কাছে ছোট বড় আকারের এক’শ আনারস ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা, কাঁঠাল প্রতি’শ ৪,০০০ থেকে ৮,০০০ টাকা, লিচু ২০০টাকা থেকে ৪০০টাকায় বিক্রি করছে।
আর মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে এসব ফল শহরে নিয়ে চড়া মূল্যে বিক্রি করছেন। যা অনেক সময় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের পক্ষে ক্রয় করে এসব ফলের স্বাদগ্রহণ করা বেশ দুরুহ হয়ে পড়ে।
কাঁঠাল ও আনারসের পাশাপাশি খাগড়াছড়ি’র বিভিন্ন উপজেলায় চলছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উন্নত জাতের আম চাষ। প্রায় প্রতিটি গ্রামেই আম চাষের প্রতিযোগীতা লক্ষ্যনীয়। নিজস্ব উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারী উদ্যোগে গড়ে উঠেছে আম, লিচুসহ মিশ্র ফলের বাগান। এবার আম ও লিচুর ফলন ভাল না হলেও কলার ফলন ছিল সন্তোষজনক।
জেলার রামগড় উপজেলার বড়পিলাক গ্রামের এক আম চাষী জানান, এ বছর খরা হওয়া সত্ত্বেও তার বাগানের ফলন ভালো। চলতি বছরে তার বাগান থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার আম বিক্রির প্রত্যাশা করছেন তিনি।
হাফছড়ি এলাকায় গ্রীন টার্চ এগ্রো ফার্ম বাগানের মালিক জানান, এবার তার বাগান থেকে প্রায় ৪০টন আম পাওয়া যাবে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ আলম জানান, দেশে ফলের চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ ফল উৎপাদন হয় পার্বত্যাঞ্চলে। এক সময় সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হতো। কিন্তু বর্তমানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে পূর্বের তুলনায় ফসল উৎপাদন মাত্রা বেড়েছে কয়েকগুণ।