যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে স্থগিত হয়ে থাকা বাংলাদেশি পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা (জিএসপি) ফিরে পেতে শ্রম অধিকার রক্ষায় আরও অগ্রগতি অর্জন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘জিএসপি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আমি এটাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে নিয়েছি। কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তবে শ্রমিক অধিকারের ক্ষেত্রে এখনো অনেক কিছু করার আছে। জিএসপি-সুবিধা ফিরে পেতে হলে শ্রমিক অধিকার রক্ষায় ক্রমাগত উন্নতি করতে হবে।’
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে গতকাল মঙ্গলবার এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে। এর বিপরীতে আমদানি করে ১০০ কোটি ডলারের পণ্য।
রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, ‘বাংলাদেশে আসার আগে এ দেশে ব্যবসা করছে যুক্তরাষ্ট্রের এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সঙ্গে আমি আলাপ করেছি। তাঁরা বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন। এ দেশে তাঁরা বিনিয়োগ করে চলেছেন। নতুন নতুন প্রযুক্তি আনছেন এবং আরও বিনিয়োগে আগ্রহী।’
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ২০১৩ সালের নভেম্বরে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা রূপরেখা চুক্তি (টিকফা) সই হয়। এ নিয়ে বছর খানেক আগে ঢাকায় একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, চলতি বছরের শেষের দিকে আবারও টিকফার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহ্মদ বলেন, গত বছর এ দেশে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে চার কোটি ডলারের। সামনের দিনগুলোতে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাওয়া উচিত। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কহার কমানোর আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বিদেশে বিনিয়োগের প্রসঙ্গে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের এখন বিদেশে বিনিয়োগ করার সক্ষমতা হয়েছে। বিশেষ করে কৃষি খাতে। কৃষিপ্রধান দেশ হওয়ায় এ খাতে আমাদের যথেষ্ট দক্ষতাও আছে।’ একপর্যায়ে তিনি জানান, গাম্বিয়া থেকে তাঁর ছেলেকে কৃষি খাতে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সভায় আইবিএফবির সভাপতি হাফিজুর রহমান খান বলেন, আফ্রিকার দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়। একইভাবে তৈরি পোশাকসহ বাংলাদেশের সব পণ্যেও শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সভায় আইবিএফবির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বক্তব্য দেন।
আরও খবর