সাংবাদিকদের ওপর হামলার খবর জানেন না পুলিশ ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা

obayad_255920_81324ঢাকা : সাংবাদিকদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা প্রদান সংক্রান্ত নির্বাচনী অনিয়মের তদন্তের শুনানিতে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার পর এবার পুলিশও বলেছে বাধা ও হামলার কথা তারা জানেন না। তাদের কাছে এ ধরণের কোন অভিযোগও আসেনি।

বুধবার ঢাকা বিভাগীয় পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে শুনানিতে পুলিশ কর্মকর্তারা এ দাবি করেছেন। শুনানিতে উপস্থিত থাকা একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

শুনানিতে পুলিশ বলেছে, তাদের উপর থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তারা তাই পালন করেছেন। ২৮ এপ্রিল সিটি নির্বাচনে কোনো সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়নি। বরং সাংবাদিকরা দলে দলে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করায় ভোটের কার্যক্রম পরিচালনায় সমস্যা হয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, আজকের শুনানিতে পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, নির্বাচনের দিন কোনো সাংবাদিক ‘ভিকটিম’ হয়েছেন- এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে কেউ কোনো প্রকার অভিযোগ করেননি। তাই পুলিশ এ বিষয়ে কিছু জানেন না। নির্বাচনের দিন সাংবাদিকদের ওপর হামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদপত্রে যেসব ছবি ছাপা হয়েছে, তা আসলে সেদিনেরই ছবি কিনা সে বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন পুলিশ পরিদর্শক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘তার থানায় কিছু হলে সেটা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে তাকে জানানো উচিত। ভোটের দিন কেউ হামলার শিকার হয়েছে- এমন কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত তার কাছে কেউ করেনি। এমনকি নির্বাচনের দিন তার থানার আওতাধীন কোনো কেন্দ্র বাধা দেওয়া হয়েছে সেটা তিনি আজ এখানে এসে জেনেছেন।’

নির্বাচন তদন্ত কমিটির সদস্য ইসির উপ সচিব আব্দুল অদুদ  বলেন, এখন আমি সরাসরি কিছু বলতে পারব না প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও পুলিশের বক্তব্য পেয়েছি। সাংবাদিকদের বক্তব্য নেয়ার ১ মাস পর সবকিছু জানা যাবে।

শুনানিতে অংশ নিয়েছেন সবুজবাগ, বনানী, ওয়ারী, পল্টন, শাজাহানপুর, যাত্রাবাড়ী, শাহআলী ও লালবাগ থানা পুলিশের পরিদর্শক এবং ১২ জন উপ-পরিদর্শক।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত তিন সিটির বিতর্কিত নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকরা পুলিশের বাধা এবং হামলার শিকার হন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে নির্বাচন কমিশন তদন্ত কমিটি গঠন করে। এরই অংশ হিসেবে আজ এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত ১৭ মে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের একই বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। তারাও সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে উল্লেখ করেছেন।

উল্লেখ্য, এই তিন সিটি নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপি হয়। সকাল ৯টার দিকেই প্রায় সব কেন্দ্র থেকে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীদের এজেন্টদের বের করে দেয় সরকার সমর্থিতরা। এসময় বিরোধী জোট সমর্থিত প্রার্থী, তাদের কর্মী এবং এজেন্টদের ওপর হামলাও চালানো হয়। পুলিশ বিএনপির পোলিং এজেন্টদের গ্রেফতার করেছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।

এসব অনিয়মের অভিযোগে ২৮ এপ্রিল বেলা ১০টার দিকেই ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট। পরে বেলা ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.