শক্তিশালী ভূমিকম্প, বন্যা বা আগ্নেয়গিরির প্রচণ্ড বিস্ফোরণের মতো কোনো দুর্যোগ যখন আঘাত হানে, তখন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখাটা খুব জরুরি হয়ে পড়ে, স্থানীয় জনগণ ও ত্রাণ সরবরাহকারী—সবাই এই প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। আর সেই চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এফআইইউ) একদল গবেষক তৈরি করেছেন বহনযোগ্য একটি বিশেষ ধরনের যন্ত্র, যা নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন ও সরবরাহ করতে সক্ষম।
সৌর ও বায়ুশক্তির সমন্বিত উৎস থেকে যন্ত্রটি বিদ্যুৎ তৈরি করে। এতে খরচ পড়ে কম। আর যন্ত্রটি খুব সহজে কোনো জায়গায় নিয়ে স্থাপন ও সংযোজন করা যায়। আবার চট করে খুলে নিয়ে সরিয়েও ফেলা যায়।
বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু না থাকলে দুর্গত কোনো এলাকায় ত্রাণসামগ্রী, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যোগাযোগ এবং সমন্বয়ের কাজটা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। গবেষকেরা বলছেন, নতুন যন্ত্রটি সাশ্রয়ী এবং বিপর্যস্ত এলাকায় স্থাপনের জন্য বিশেষ উপযোগী। এটি ব্যবহার করে ল্যাপটপ চালানো যাবে ও আলোর ব্যবস্থা করা যাবে। পাশাপাশি খাবার তৈরি ও সংরক্ষণ এবং স্বাস্থ্যপরিচর্যার কাজেও প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাবে। যন্ত্রটি প্রতিদিন দেড় কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করে। মার্কিন বাড়িঘরের গড়পড়তা চাহিদার (দিনে ৩০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা) তুলনায় এটি অপর্যাপ্ত হলেও গবেষকেরা জানান, প্রত্যন্ত অঞ্চলে জরুরি চাহিদা পূরণের জন্য এটুকু বিদ্যুৎই অনেক মূল্যবান।
এফআইইউর ওই গবেষকদলের প্রধান আন্দ্রে লিমা সিউফো বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণের মধ্যে তাঁরা একটি ভারসাম্য তৈরির চেষ্টা করছেন। যন্ত্রটির ওজন ১১৩ কেজির কিছু বেশি। এটির সামর্থ্য আরও বাড়ানো সম্ভব হলে তা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে অনেক বেশি মানুষের জীবন বাঁচাতে পারবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় এ রকম যন্ত্রে অনেক বেশি পরিমাণে তৈরি করা সম্ভব।
আরও খবর