তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার অবদান প্রধানমন্ত্রীর

Sylhet_1_284140967সিলেটে: তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ অসামান্য অবদান রেখেছে মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, এ কাজ সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে।

তিনি বলেন, অন্যন্য দেশে এক্ষেত্রে বিভাজন থাকলেও আমাদের দেশে নেই। যে কারণে ডিজিটাল ‘ডিভাইড’ হয়নি।

বৃহস্পতিবার (২১ মে) সন্ধ্যায় সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রাক বাজেট আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সহযোগিতায় এ আলোচনা সভার আয়োজন করে সিলেট জেলা প্রশাসন।

আলোচনা সভায় অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রথমবারের মতো এবার শিশু বাজেট করা হয়েছে। তবে তেমন ভালো নাও হতে পারে।

এছাড়া হাওরাঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি করতে সরকার যথাযথ ভূমিকা নেবে। হাওরাঞ্চলের শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, চা শ্রমিকরা শিক্ষায় যেমন পিছিয়ে, তেমনি তারা মানবেতর জীবন-যাপন করে। এজন্য চা শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়নে কার্যকরী প্রদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

সিলেটের কৃষিখাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের সবচেয়ে বেশি অনাবাদি জমি সিলেট অঞ্চলে। অনাবাদি জমির হার প্রায় ৩০ শতাংশ। যার আয়তন ১ লাখ ৮১ হাজার হেক্টর। এ ব্যাপারে কৃষিমন্ত্রীও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানান তিনি।

জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাকে ফান্ড তৈরির তাগিদ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাজেটে যে অর্থ দেওয়া হয় সেগুলো দু’একটি খেলায় খরচ হয়ে যায়। তাই ন্যূনতম ৫০ লাখ টাকা করে ফান্ড তৈরি করলে অন্তত পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না।

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও টমটম চালক-মালিকদের সমালোচনা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, শুধু সিলেটেই এগুলো চলছে। তাই চালক-মালিকদের ধরে ধরে জেলে পাঠানোর জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে নির্দেশ দেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সরকার যেখানে ব্যাটারি আমদানি নিষিদ্ধ করেছে সেখানে তাদের কোনোমতেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাঅলাদের ছাড় দেওয়া হবে না। যিনি এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন তাকেও কারাগারে দেওয়া উচিৎ।

তাছাড়া উড়াল সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা নাকচ করে দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সিলেট নগরীর রাস্তা সংকুচিত থাকায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে সুরমা সেতু সংলগ্ন এলাকায় একটি উড়াল সেতু বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন না করে ৫০ শতাংশ সারফেসিং ওয়াটারের মাধ্যমে নেওয়া হবে। যে কারণে সিলেটে আরেকটি পানি শোধনাগার করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

হবিগঞ্জের আউশকান্দিতে শিল্প উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন অর্থমন্ত্রী।

সিলেট চেম্বারের সভাপতি সালাউদ্দিন আলী আহমদের সভাপতিত্বে ও সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলামের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন- জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান, সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মো. জামাল উদ্দীন আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. আব্দুল মোমেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে উন্মুক্ত আলোচনায় বাজেটের বিভিন্ন দিক নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন।

এর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে দাম বাড়ানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখা, মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য মূসক মুক্ত করে দেওয়া, চাল আমদানি মূল্যের ভর্তুকি ১০ শতাংশের বদলে ৩০ শতাংশে উন্নীত করা, মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন প্রকল্পের বরাদ্দ দেওয়া, বিদেশি টিভি চ্যানেলে দেওয়া বিজ্ঞাপনের ওপর করারোপ করা, কৃষি যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে কর কমিয়ে আনা, হাওরাঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, ফায়ার সার্ভিসকে আধুনিকায়ন করা, রাস্তা-ঘাট সংস্কারে প্রতিবন্ধকতা খতিয়ে দেখা, সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ঘোষণা, অঞ্চলভিত্তিক নিয়োগে প্রাধান্য দেওয়া, কারিগরি শিক্ষায় সিলেটকে এগিয়ে নেওয়া, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করা, অনাবাদি জমিকে আবাদের আওতায় নিয়ে আসাসহ অসংখ্য প্রস্তাবনা।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.