মিয়ানমার উপকূল থেকে ২০৮ জন ভাসমান অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এরা দু’টি নৌকায় ভাসছিলেন। এদের মধ্যে প্রায় ২’শ ‘বাঙ্গালি’ রয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির রাখাইন রাজ্যের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তিং মুয়াং সোয়ে।
শুক্রবার দুপুরে থাইল্যান্ডের পত্রিকা ব্যাংকক পোস্ট একটি সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে।
সাগরপথে মানবপাচার নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গত প্রায় এক মাস ধরে তুমুল আলোচনার প্রেক্ষাপটে এই প্রথম মিয়ানমার উপকূলে অবৈধ অভিবাসীদের উদ্ধারের কোনো ঘটনা ঘটল। বৃহস্পতিবার সাগরে পাচারকারীদের নৌকা দুটির সন্ধান পায় নৌবাহিনীর একটি টহল জাহাজ।
মিয়ানমারে নির্যাতন ও বঞ্চনার শিকার রোহিঙ্গারা গত কয়েক বছর ধরে বাঁচার আশায় সাগর পাড়ি দিয়ে আশেপাশের দেশ, বিশেষ করে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টায় আছেন। আর বাংলাদেশ থেকেও নৌকা বা মাছ ধরার ট্রলারে করে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টার ঘটনা ঘটছে নিয়মিতই।
গতমাসের শেষে দক্ষিণ থাইল্যান্ডের জঙ্গলে পাচারকারীদের পরিত্যক্ত এক ক্যাম্পে অভিবাসীদের গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
এরই মধ্যে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে পাচারকারীদের কয়েকটি নৌকা থেকে তিন হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ উদ্বেগ জানালে এই বিপদগ্রস্ত মানুষদের সাগর থেকে উদ্ধার করে আপাতত আশ্রয় ও নিজেদের দেশের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সম্মত হয় মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া।
রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ ও তাদের জীবনমানের উন্নয়নের জন্য মিয়ামারের ওপর দীর্ঘদিন ধরে চাপ থাকলেও সাম্প্রতিক মানবপাচারের ঘটনায় রোহিঙ্গা সঙ্কট নতুন মাত্রা পায়। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া পাচারের শিকার মানুষদের সাহায্য করতে রাজি হওয়ায় মিয়ানমার সরকারও সুর বদলাতে থাকে।
তবে দেশটির দাবি, পাচারের শিকার হয়ে যারা নৌকায় করে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছে, তারা রোহিঙ্গা নয়।
মিয়ানমারের জেনারেল মিন অং হ্লিং বলেন, এই অবৈধ অভিবাসীদের অনেকেই বাংলাদেশি। জাতিসংঘের সাহায্য পাওয়ার আশায় তারা নিজেদের মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বলে দাবি করেছে।
তবে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেন, মানবপাচারের শিকার হয়ে এখন আন্দামান সাগরে আটকেপড়া মানুষদের অধিকাংশই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দেশের ইয়ং ছেলেপেলেরা কাজের জন্য ভাগ্যান্বেষণে যেতে পারে, কিন্তু এই যে মহিলা ও বাচ্চা-বৃদ্ধরা গিয়েছে, তাদের বেশভূষা দেখবেন, তা দেখলে স্পষ্ট হয় বেশিরভাগ রোহিঙ্গা।”